কানাডায় নয় মাসঃ আমাদের অভিজ্ঞতা- প্রশ্নোত্তর পর্ব ০১:

আমার হাসবেন্ড বেশ কিছুদিন ধরে এই গ্রপে “কানাডায় নয় মাসঃ আমাদের অভিজ্ঞতা” শেয়ার করছে। তার লেখাগুলোর প্রেক্ষিতে পোষ্টে বা ইনবক্সে অনেক প্রশ্ন পাই দুজনেই। আমাদের স্বল্প জ্ঞানে আর অভিজ্ঞতায় যতটুকু সম্ভব আমরা উত্তর দেয়ারও চেষ্টা করি। তবু কিছু কিছু কমন প্রশ্ন আছে যা অনেকেই করে থাকেন। আমার এই পোষ্টে আমি সেই প্রশ্নগুলো নিয়ে কিছুটা আলোচনা করতে চাই।

প্রথমেই ডিসক্লেইমারঃ “এখানে আমি যা যা লিখছি তা আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লেখা; কিছু ঠেকে শিখেছি, কিছু দেখে। সবটাই সবার জন্য পারফেক্ট হবে তা নয়, তাই আপনার নিজস্ব জ্ঞানবুদ্ধির প্রয়োগ বাঞ্ছনীয়”।

প্রশ্ন ০১: আমি বাংলাদেশে ভাল জব করি। ইনকামও মাশাল্লাহ ভাল। আমার কি কানাডা যাওয়া উচিত হবে?

উত্তরঃ ভাই এবং বোনেরা, আপনারা নিজেরাও জানেন যে এই প্রশ্নের জবাব দেয়া কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। আপনার নিজস্ব লাইফস্টাইল, কেরিয়ার, ফ্যামিলি সহ আরো অনেক বিষয় ইমিগ্রেশন ডিসিশানে গূরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেশে আপনি যতই ভাল জব করেন না কেন, এখানে আসবেন শূন্য হাতে। আবার নতুন করে শুরু করবেন সবকিছু। এই নতুন জীবন একটা নতুন কেনা খাতার মত, যাতে আপনি আবার নতুন করে জীবনের গল্প লিখবেন। কারো গল্প হয়ত রুপকথার মত সুন্দর হবে, কারো হয়ত মাঝামাঝি, আবার কারো হবে উল্টোটা।

আমাদের নিজেদের কথাই বলি, আমাদের প্লেন যখন ঢাকা এয়ারপোর্টের রানওয়েতে চলতে শুরু করল, তখন হঠাতই এক অজানা আতঙ্ক আমাদের দুজনকেই তীব্রভাবে গ্রাস করল। নিজেদের অজানা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একটা ভয় ঢুকে গেল মনের মধ্যে, শুধু নিজেরা তো নই, সাথে যে ২ বছরের ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছি তাকে আদৌ সুন্দর ভবিষ্যত দিতে পারব কিনা, সেই আশঙ্কায়!

তবে আমার মতে ইমিগ্রেশন যদি করতে চান, তবে যত ইয়ং বয়সে আসবেন ততই ভাল। তাতে ক্যারিয়ার নতুন করে শুরু করলেও হারানোর কষ্ট কম হবে। আমরা দুজনেই আমাদের ৫ বছরের ক্যারিয়ার পেছনে ফেলে এসেছি, এখানে এসে নতুন করে শুরু করেছি। কিন্তু কিছু হারিয়েছি বলে মনে হয়না। আমাদেরই পরিচিত এক দেশী ভাই আছে, তিনিও দেশে ব্যাংকেই জব করতেন, আমাদের তুলনায় অনেকটা উপরের পজিশনে। সেই ব্যক্তি যখন কানাডায় এসে আমাদের লেভেলে জব শুরু করলেন, তখন তার মধ্যে অনেকটা হতাশা আমরা নিজেরাই টের পেয়েছি!!

প্রশ্ন ০২: কানাডায় জব প্রসপেক্ট কেমন?/ আমি কি ধরনের জব পাবো?

উত্তরঃ এইবার আসেন, আসল প্রশ্নে!

জবের ব্যাপারে আমি একটা কথাই বলব, যদি আপনার যোগ্যতা থাকে, আর আপনি আসলেই স্কিল্ড হন তবে আপনার জব না হওয়ার কোন কারন নেই। অনেকেই আমাদের কাছে বিভিন্ন সেক্টরের জব এভেইলেবিলিটির ব্যাপারে জানতে চান, তাদের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ, নিজেরা রিসার্চ করেন। এখন প্রশ্ন করতে পারেন, কিভাবে রিসার্চ করব? কোথা থেকে শুরু করব? আসেন, এই ব্যাপারে কিছু আলোকপাত করি।

টিপস ১- জব সার্চঃ indeed.com এটা একটা অনলাইন জব সার্চ ওয়েবসাইট। এবং কানাডার জব মার্কেটে পপুলার জব সাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম। আপনার কোন ধরনের জব দরকার সেটা আন্দাজ করে সার্চ শুরু করুন। অনেক জব সার্কুলার পাবেন। সার্কুলারগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন, খেয়াল করুন তারা কি চাচ্ছে। আপনার জব এক্সপিরিয়েন্সের সাথে যায় কিনা দেখুন। আর দেখুন এর জন্য তারা কোন কোর্স বা সার্টিফিকেশন চাচ্ছে কিনা। যদি সম্ভব হয়, সেই সার্টিফিকেশন দেশে থাকতেই করে ফেলুন।

উদাহরনস্বরুপঃ কানাডায় ফাইনান্সিয়াল ইন্ডাস্ট্রিতে বর্তমানে এন্টি মানি লন্ডারিং –এর খুব ডিমান্ড। এবং এই রিলেটেড জবের জন্য ক্যামস /এক্যামস সার্টিফিকেশন খুব জরুরি। এখন আপনি যদি এই লাইনের লোক হন, যদি জব টাইটেল ঠিক করতে পারেন আর যদি এক্যামস থাকে, তাহলে আপনি একটা না, কয়েকটা জব পেয়ে যাবেন একসাথেই।

টিপস ২: স্যালারি কেমন পাবো?
Glassdoor.com এ যান। যেই জবকে আপনি টার্গেট করেছেন, সেটার ব্যাপারে সার্চ করুন। স্যালারি, ইন্টারভিউ প্রসেস, ইন্টারভিউ কোয়েশ্চেন ইত্যাদি সম্পর্কে ভাল আইডিয়া পেয়ে যাবেন।

টিপস ৩ – LinkedIn
LinkedIn এর নাম নিশ্চই শুনেছেন। যত তাড়াতাড়ি পারেন লিংকডিনে একাউন্ট খুলে ফেলুন, আর যদি লিংকডইন প্রিমিয়াম একাউন্ট খুলতে পারেন তাহলে তো আরো ভাল, কিন্তু এর ফি টা অনেক বেশি।

এবার আপনি যেই জবকে টার্গেট করেছেন কানাডাতে সেই জব করছে এমন কাউকে খুজে বের করুন। প্রথমে দেশি লোকজনকেই খুঁজুন। এড রিকোয়েস্ট পাঠান। তাদের সাথে নেটওয়ার্কিং শুরু করুন। জানার চেষ্টা করুন, কিভাবে নিজেকে তৈরি করলে আপনি জব পাবেন।

ও, আরেকটা প্রশ্ন, লিংকডইন প্রোফাইল কিভাবে ক্রিয়েট করবেন? আর প্রোফাইলে কি লিখবেন? অন্যদের প্রোফাইল দেখুন। কয়েকটা দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন যে কিভাবে কি লিখতে হবে, অবশ্যই কানাডায় যারা জব করছে তাদের প্রোফাইল ফলো করবেন এই ক্ষেত্রে।

“কানাডাতে ৮০% জব হয় নেটওয়ার্কিং এর ভিত্তিতে, এই কথাটা সত্যি। এমনকি যেই জব আপনি ইন্টারভিউ দিয়ে পাবেন, সেটাও এক ধরনের নেটওয়ার্কিং।“

এখানে প্রায় প্রতিটি কোম্পানিতেই জব এর ব্যাপারে তাদের এমপ্লয়িদের ইন্টারনাল রেফারাল আগে প্রেফারেন্স পায়, তারপরে অনলাইন এপ্লিকেন্টরা। তাই আপনি যদি নেটওয়ার্কিং দেশে থাকতেই শুরু করেন তাহলে কানাডা আসার পর তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন, তাদের কাছ থেকে রেফারাল পাওয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারবেন।

প্লিজ প্লিজ প্লিজ, নেটওয়ার্কিং করতে গিয়ে কাউকে অযথা বিরক্ত করবেন না। আর যাকে আপনি চিনেন না, জানেন না, তার সাথে নেটওয়ার্কিং করতে গিয়ে শুরুতেই তাকে একগাদা প্রশ্ন করে বিপদে ফেলবেন না। আমার মনে হয় একবার একটির বেশি প্রশ্ন করলে উত্তর না পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। যদি সে রিপ্লাই দেয়, তারপরে আস্তে আস্তে আরো ইনফরমেশন জানার চেষ্টা করতে পারেন। আর কেউ যদি রিপ্লাই নাও দেয়, হতাশ হবার কিছু নেই। এখানে সবাই এতই ব্যস্ত থাকে যে, লিংকডইনে নিয়মিত ঢুকার সময় ম্যানেজ করতে পারে না!

টিপস ০৪: এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি
এতক্ষন যেগুলো বললাম, সেগুলো মূলত দেশে থাকতেই শুরু করে দেয়ার মত। এবার মনে করেন আপনি অলরেডি কানাডায় চলে এসেছেন। এখন কি করবেন? কিভাবে শুরু করবেন?

কানাডায় নিউকামারদের জন্য গভমেন্ট ফান্ডেড কিছু এজেন্সি আছে। তাদের কাজ হল নিউকামারদেরকে জব পাওয়ার জন্য সহযোগিতা করা। তবে সহযোগিতা মানে এই না যে ওরা আপনাকে জব পাইয়ে দেবে, ওদের কাজ হচ্ছে আপনাকে তৈরি করা, রেজুমি তৈরি করা থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রি নলেজ, কানাডিয়ান ওয়ার্কপ্লেস এনভায়রনমেন্ট, বেসিক এটিকেট, মক ইন্টারভিউ ইত্যাদি নানা ভাবে আপনাকে নলেজেবল করে তুলতে হেল্প করবে, যাতে আপনি নিজেই জব এর জন্য ১০০% প্রিপেয়ার্ড হয়ে যান। এসব অর্গানাইজেশন রেগুলার ইন্টারভালে কিছু ব্রিজিং প্রোগ্রাম পরিচালনা করে, সেখানে পার্টিসিপেট করার চেষ্টা করুন। সত্যি বলছি, এরা আপনাকে জব সার্চের ব্যাপারে খুঁটিনাটি অনেক কিছু শেখাবে, যা সত্যি বলতে কি, অনেক বছর ধরে কানাডা প্রবাসী আপনার অনেক কাছের লোকও বলতে পারবে না, বা তারা হয়ত বুঝবেও না যে আপনার এটা জানা প্রয়োজন!!!

আমি ব্যাংক জবের ব্যাপারে ফোকাসড ছিলাম, নিজেও ব্রিজিং প্রোগ্রামে পার্টিসিপেট করেছি, এবং আমি ১০০% স্যাটিসফায়েড! একটা উদাহরন দেই, আমি ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে দেখি যে আমার ইন্টারভিউ নিবে তার সাথে আমার আগেই পরিচয় হয়েছে, সেই ব্রিজিং প্রোগ্রামে! এবং পরিচিত হবার সুবাদে সেই ইন্টারভিউ আমার অসাধারন হয়েছিল!

এছাড়া আরেক ধরনের এজেন্সি আছে, যারা বিভিন্ন অরগানাইজেশনে কন্ট্রাকচুয়াল বেসিসে লোক নিয়োগে হেল্প করে। ওরা বিনিময়ে আপনার স্যালারি থেকে একটা অংশ প্রতিমাসে কেটে নিবে (ওরা আপানাকে যেই স্যালারি বলবে একচুয়ালি কোম্পানি এর চেয়ে বেশি পে করবে, তো যেই গ্যাপটা হবে সেটাই ওদের কমিশন) এবং আপনি যদি এমন সেক্টরের লোক হন যেখানে পাবলিকলি নিয়োগ খুব একটা হয় না, ইন্টারনাল নিয়োগ হয়, সেই সব জবের জন্য এই এজেন্সিগুলো খুব ভাল মাধ্যম! ব্যাংকিং-এও ব্যাক অফিসের অনেক জব এইভাবে পাওয়া যায়।

আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে উপরের বিষয়গুলো নিয়ে আপনাদের কিছু ইনফরমেশন শেয়ার করতে চেয়েছি। আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি কারো কোন উপকারে আসে তবেই এই লেখার সার্থকতা!!!!

শুভরাত্রি!!!

Courtesy: Ayesha Parvin

FB Link : https://www.facebook.com/groups/camigbd/permalink/2038925879484711/

কানাডা ইমিগ্রেশন: আপনি প্রতারিত হচ্ছেন না তো?

ইমিগ্রেশন নিয়ে বিভিন্নজনের বিভিন্নরকম প্রশ্ন থাকে। আমি অনেকবার এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে লিখেছি ।তারপরও কিছু কমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। অনেকেই জানতে চান-  ১ ভিজিট ভিসায় এসে কানাডা তে থাকা যাবে কি ? বিয়ে করে কানাডা তে আসা যাবে কি ? কানাডাতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় আসা যাবে কি ? IELTS ছাড়া আসা যাবে কি ? eTA visa নিয়ে আসা যাবে কি ? এক কথায় সবগুলো প্রশ্নের  উত্তরই হলো-  না ।

তারপরও আবার জিজ্ঞাসা করেন যে কেন না – বুঝিয়ে বলুন, অমুক এজেন্সি তো বলেছে আসা যায় । আপনি ‘না’ বলছেন, দেখবেন চার মাস পর আমি আসবই । আমার উত্তর – হ্যাঁ বেড়াতে আসতে পারবেন,কিন্তু ইমিগ্রেশন এর জন্য আপনি এলিজেবল না,  তাই ইমিগ্র্যান্ট হয়ে আসতে পারবেন না । যারাই এরকম এলিজেবল না হয়ে ও আসবেন বলে চ্যালেঞ্জ করেছেন কেউই এখন পর্যন্ত আসতে পারেন নি। কারণ উনাদের কে আমিও চ্যালেঞ্জ করেছি যে আসার পর অবশ্যই ইনবক্স এ জানাবেন আর কানাডাতে আছেন এমন ছবি দেবেন।  এখন ও উনারা সেটা পারেন নি । ইনবক্স এ বুঝাতে বুঝাতে আর পারি না । না মানেই না , No means no .

অনেকেই আবার বলেছেন যে আপু টাকা তো দিলাম কিন্তু ফেইক ভিসা পেলাম । কেউ কেউ বলেছেন আপু শিওর আফটার ভিসা টাকা দেওয়া ,সবাইকেই আমি ‘না’ বলেছি । যেটা হয় না সেটা কে হয় যারা বলেন, উনারা যতই সত্যবাদি হোন না কেন শেষ পর্যন্ত কিন্তু আপনি প্রমাণ পাবেন ই যে উনারা মিথ্যা বলেছেন।  কিন্তু ততদিনে আপনার মূল্যবান টাইম নষ্ট হবে, হয়তো বা আপনার অনেক টাকা ও উনাদের পকেটে যাবে । তাই সময় থাকতে সাবধান হোন ।

আমি কখনোই কাউকে মিথ্যা ভিসার আশ্বাস দেইনি।  নিজের বিবেক দিয়ে,নিজের বুদ্ধি দিয়ে যাচাই করে সি আই সি তে(http://www.cic.gc.ca/english/ ) কি বলা হয়েছে সেটা ভাল করে বুঝে তারপর ঠিক করুন, যে সত্যি আপনি আসতে পারবেন না কি পারবেন না । আসার জন্য আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন , আপনি ভিসা পাওয়ার যোগ্য না হলে কানাডা গভর্নমেন্ট আপনাকে ভিসা দিবে না এটাই হল সত্য কথা । আপনি যোগ্য হলে আর কানাডা গভর্নমেন্ট এর নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে কানাডা গভর্নমেন্ট আপনাকে ভিসা দিবে । আমি অনেকদিন থেকে আপনারা যারা কানাডার ভিসা আবেদন এর জন্য আমার সাথে ইনবক্স এ কথা বলেছেন উনাদের অনেকের থেকে কিছু কথা জেনেছি সেই কথাগুলো হল ।

১ আপু আমাকে তো তারা বলছে ভিসা হবে কিন্তু আপনার কাছ থেকে বিস্তারিত বুঝে আমি এখন বুঝলাম যে আমি আপ্ল্যাই করলে ও ভিসা হবে না শুধু শুধু টাকা যাবে ।

২ আপু যিনি বলেছেন তিনি তো আমার আত্মীয় হোন এখন আমি উনার কথা বিশ্বাস করব নাকি আপনার কথা ? আমার সোজা উত্তর , উনি আপনাকে মিথ্যা ভিসার আশ্বাস দিয়ে টাকা চাইছেন উনি আপনার কেমন আত্মীয় বলুন তো প্লিজ ? আজকাল যে যুগ ভাই ও ভাই কে ঠকায় আর উনি তো আত্মীয় , সব তো জানলেন এখন আপনি ঠিক করুন কি করা উচিত ।

৩ আপু তারা তো কানাডা থেকে অফার দিচ্ছে , ফেইক হবে কেন ? আমার উত্তর কোন কানাডিয়ান কখন ও বাটপারি করবে না ভাই এটা আমি শিওর । আমি চেক করে দেখেছি আপনি ও ভাল করে চেক করে দেখুন তারা কানাডিয়ানদের মতো নাম ব্যবহার করছে , কানাডার ঠিকানা ব্যবহার করছে , খুব সুন্দর করে সবকিছু বলছে কিন্তু তারা যেটা বলছে সেটা হয় না , সি আই সি থেকে না বলা হচ্ছে , আপনি একটু ভাল করে চেক করে দেখলেই বুঝবেন যে তারা আসলে যে কোন দেশের ইমিগ্র্যান্ট , তারা কানাডিয়ান নয় শুধু মাত্র নকল নাম ঠিকানা ব্যবহার করছে তাই তারা মিথ্যাবাদি আর একজন মিথ্যাবাদি আপনাদের কে কি সত্যি ভিসা দিতে পারবে ভাবুন তো আবার ?

৪ আপু এই ভিসাটা একটু দেখেন তো প্লিজ রিয়েল নাকি ফেইক । আমার উত্তর এটা ফেইক ভিসা । ধন্যবাদ আপু আপনি বলায় আমাদের টাকা গুলো বেঁচে গেল তাহলে আর এটার জন্য টাকা দেব না ।

৫ আপু এই ভিসাটা রিয়েল নাকি ফেইক আমরা নিজের হাতে এনেছি ও তাদের কে দুই লাখ ,কেউ বা বলছেন তিন লাখ বা এরকম ই লাখ টাকা কিন্তু দিয়ে দিয়েছি আপু । আমার উত্তর এটা ফেইক ,আপনি কেন না বুঝে টাকা দিলেন ? উত্তর আপু আমাদের থেকে তারা টাকা নিয়ে নিয়েছে তারা অনেক পাওয়ারফুল আর আমরা জানতাম না যে WORK PERMIT VISA , হয়না ।

৬ আপু তারা তো বলছে IELTS ছাড়া ESL COURSE করতে আসা যায় । আমার উত্তর এই দেখেন কানাডা থেকেই স্টুডেন্টরা বলছেন , “আপু ESL course নিয়ে আসা ঠিক নয় । তাছাড়া ভিসা ও পাবেন না । এটার পিছনে টাকা দেওয়া ঠিক নয় আপু । ”

৭ আপু আপনি বলায় বুঝলাম যে এগুলো মিথ্যা কথা । উনি তো বলছিলেন যে কানাডিয়ান কোম্পানিতে জব হবে ,আফটার ভিসা পেমেন্ট । আপনাকে , অনেক ধন্যাবাদ ।আপু আপনি কষ্ট করে বুঝিয়ে বলায় আমার ৩০ লাখ টাকা বেঁচে গেল । আমার উত্তর কি বলেন ৩০ লাখ টাকা চেয়েছিল ? ৩ লাখ নাকি ৩০ লাখ লিখেছেন ভাই ? আপু ৩০ লাখ । আপনাকে ও ধন্যবাদ ভাই ।আল্লাহ আপনার টাকাগুলো বাঁচালেন ।

৮ আপু উনি তো U.K থাকেন কেউ বা আর অন্য দেশের নাম বলছেন । উনি অনেক ভালমানুষ ,উনার অনেক পাওয়ার উনি বলেছেন রেস্টুরেন্ট এর জব হবে , আফটার ভিসা পেমেন্ট । আমার উত্তর আপনাকে না অনেকবার বুঝিয়ে বলেছি এগুলো হয়না , ঠিক আছে আপনার ইচ্ছা হলে টাকা দেন । উনি যতই পাওয়ারফুল হন সেটা বিষয় নয় ,বিষয় হলো উনি যেটা বলছেন সেটা মিথ্যা বলছেন । উনি মিথ্যা বলছেন তাহলেই বুঝুন উনি কেমন ভালমানুষ ? আপনার টাকা আর আপনি আসতে চান ,ইচ্ছা হলে টাকা দেন আমি কি করব বলুন ? আমার যেটা বলার আমি বলেছি বাকি আপনার ইচ্ছা । আমাকে আর বারবার বিরক্ত করবেন না একবার বলেছি তো ভিসা পেলে ও ফেইক ভিসা পাবেন বুঝেশুনে টাকা দিবেন । May allah help you.

hi apu . আপনাকে না ,না করেছি ,আপনি আবার নক দিয়েছেন ? আপু কেমন আছেন ? প্লিজ রাগ করবেন না । আমার উত্তর ভাল আছি । না রাগ করিনি বলুন আজ আবার কি জানতে চান ? আপু কিছুই জানতে চাই না । আপনি বলায় আমার অনেক উপকার হয়েছে এখন আমি বুঝতে পেরেছি যে উনি মিথ্যা বলছেন তাই আর আসব না । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু । আল্লাহ আপনার ভাল করুন । আপনার পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভাল থাকুন আপু । হুম , ওয়েলকাম । আপনি ও ভাল থাকুন । আশা করি এবার বুঝতে পেরেছেন যে ভিসা এভবে হয়না তাই আর কাউকে টাকা দিবেননা প্লিজ ।

৯ আপু কেউ স্পন্সর করলে কি কানাডা তে আসা যায় ? আমার উত্তর না ভাই । ফ্যামিলি ভিসায় ছাড়া কেউ কাউকে স্পন্সর করতে পারেন না । ওহ । ফ্যামিলি ভিসা কি আপু ? ঐ যে যারা কানাডাতে থাকেন উনারা উনাদের husband / wife , parents , grandparents k sponsorকরে আনতে পারবেন এটাকে বলে ফ্যামিলি ভিসা । এই যে কয়েকজন এর কথা বললাম এরা ছাড়া আর কাউকে ফ্যামিলি ভিসায় আনা যায়না । আশা করি বুঝতে পেরেছেন ।

হুম আপু বুঝেছি । অনেক ধন্যবাদ ।

১০ আপু আপনি কানাডা থাকলে কি হবে ,আপনি অনেক কিছুই জানেন না , ফারমার ভিসায় কানাডা আসা যায় । প্লিজ একটু খবর নিয়ে জেনে দেন না । একজন বলছেন এভাবে আসা যাবে ,আসতে পারলে আমার অনেক ভাল হতো ।

আমার উত্তর এই যে দেখেন About farmer visa all info . asben naki atto taka khoroc kore ? তাছাড়া এটা বাংলাদেশীদের জন্য ভাল নয় বিদেশীরা হয়তো এভাবে আসেন কেউ কেউ ।

ঠিক আছে আপু বুঝেছি । তাহলে আর এটার জন্য এপ্ল্যাই করব না ।

হুম সেটাই করবেন , যারা আপনাকে এসব বলছেন তারা শুধু টাকা নেওয়ার জন্য বলছেন ।সাবধান আমার সাথে না বুঝে কাউকে টাকা দেবেননা প্লিজ ।

১১ আপু কানাডা তো এখন অনেক সহজ করেছে আর আপনি না করছেন ।

আমার উত্তর কি সহজ করেছে ভাই একটু বুঝিয়ে বলবেন কি ,আমি তো সহজ কিছুই দেখি না । সব আগের মতোই আছে , আপনি এলিজেবল হলে আসতে পারবেন আর না হলে নাই ।

এই যে দেখেন আপু , http://notundesh.com/news/159dda5f307f18 .

হুম এটা তো জানি কারণ আমি এখানেই থাকি । আর নতুন দেশ এর লিখা ও পড়েছি, maybe ami share o koreci .

এটাতে আপনাদের কি সুবিধা হবে বলুন তো প্লিজ ? না আপু সবাই যে বলছেন এখন কানাডাতে আসা অনেক সহজ তাড়াতাড়ি PR পাওয়া যাবে ।

হুম এটার সাথে PR পাওয়ার কি সম্পর্ক কি বলুনতো ?

এটা তো আমরা যারা অলরেডি কানাডার PR পেয়েছি কিন্তু এখন ও নাগরিকত্ব পাই নাই আমাদের সুবিধা । যারা কানাডাতে আসার জন্য এলিজেবল নন উনাদের জন্য এটা আলাদা কোন সুবিধা নয় বা দরকারি নয় । যারা কানাডাতে PR কার্ড নিয়ে আছেন বা যারা PR কার্ড নিয়ে কানাডাতে নতুন আসবেন উনাদের জন্য ও যারা কানাডাতে পড়তে এসেছেন আর এখন ও PR card পান নি বা ভবিষ্যতে পড়তে আসবেন সেসব ছাত্রছাত্রীদের জন্য ও এটা সুবিধাজনক । আর যারা কানাডা ইমিগ্রেশন এর আপ্ল্যাই করার জন্য এলিজেবল নয় উনাদের জন্য এটা কোন বাড়তি সুবিধা নয় বা দরকারি নয় । আশা করি বুঝতে পেরেছেন । অনেক ধন্যবাদ । কানাডার ভিসার জন্য লাখ লাখ টাকা আর দেবেন না দেবেন না । কিভাবে ভিসা হয় জেনে নিতে ভুলবেন না ভুলবেন না । আমি আপনাদের জানাতে চাই , জেনে বুঝেই ভিসার আবেদনটা করুন না ,করুন না ।কানাডার ভিসার জন্য পাগল হয়ে ছুটছেন ? সাবধান , এজেন্সি , আত্মীয়, ফেইসবুক পেইজ ,দালাল , ভি এফ এস সবাই কিন্তু আপনাকে ধোকা দিবে । বাংলাদেশ থেকে অনেকেই আমাকে বলেছেন যে উনাদের লাখ লাখ টাকা এভাবে এদের বাটপারির জন্য গিয়েছে , আমি প্রমাণসহ দেখিয়ে দিতে পারব । তাই আপনাদের সবার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ কিভাবে কানাডার ভিসা পাওয়া যায় ,মানে কানাডাতে আসতে কি কি যোগ্যতা লাগে সেটা বুঝুন প্রথমে । আপনি কানাডা আসার যোগ্য হলে ভিসা পাবেন আর না হয় কেউ আপনাকে ভিসা দিতে পারবে না , আমি আবার বলছি না না না ,এদের কেউ ই আপনাকে ভিসা দিতে পারবে না । আপনি আপনার যোগ্যতা দিয়ে ভিসা পাবেন , টাকা দিয়ে নয় , এদের মিথ্যা আশ্বাসে নয় ।আপনি কানাডা এর ভিসা পাওয়ার যোগ্য কিনা বিস্তারিত জানতে আমাকে ইনবক্স করতে পারেন । আবার ও বলছি না জেনে না বুঝে কাউকে টাকা দিবেন না ।ধন্যবাদ সবাইকে ।অনেকবার অনেকভাবে বলেছি ,আজ আবার সহজ করে বলি ,প্লিজ ফেক ভিসা বা ফেক ওয়ার্ক পারমিট এর পিছনে ছুটবেন না ।যখন ই কেউ বলবেন কানাডার ওয়ার্ক পারমিট , ওয়ার্ক ভিসা বা জব অফার লেটার দিব তখন ই বুঝবেন উনি বা উনারা বাটপার । বাটপার কে চেনার সহজ উপায় ,কানাডার ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট দেবে বলে যারা তারাই বাটপার । তারা এমন ও বলে যে vfs থেকে নিজে ভিসা তুলবেন এসব কথায় বিশ্বাস করলেই আপনার টাকা ও সময় নষ্ট হবে । কানাডার ভিসা এভাবে হয়না ,কি করে কানাডার ভিসা পাবেন জানতে আমাকে ইনবক্স করার অনুরধ করছি । কানাডার ওয়ার্ক পারমিট ও eTA viisa সেগুলো তো বাংলাদেশীদের দেওয়া হয় ই না ।

কানাডার ভিসা দিল্লী থেকে নয় ,সিঙ্গাপুর থেকে হয় আর সেটা সবাইকে দেওয়া হয় না । সেটা পেতে হলে অনেক যোগ্যতার দরকার ,আপনি সেটার যোগ্য কিনা জানতে আমাদের সাথে থাকুন ,আমাকে ইনবক্স করুন প্লিজ । vfs থেকে ভিসা আনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হলে আপনার টাকা ,টাইম , প্রাণ সবই যাবে ,তাই সময় থাকতে সাবধান হন । প্রতারণা থেকে নিজে বাঁচুন অন্যকে বাঁচান ।কিভাবে বাঁচবেন ? সঠিক তথ্য জেনে তারপর কানাডা এর যে কোন রকমের ভিসার জন্য আবেদন করুন । সঠিক তথ্য কই জানবেন ? এখানে জানুন ,http://www.cic.gc.ca/english/index.asp ।তারপর ও না বুঝলে আমাকে ইনবক্স করুন প্লিজ ।সবার মঙ্গল কামনায় আমি । আল্লাহ সবাইকে প্রতারকদের হাত থেকে রক্ষা করুন ,আমিন ।

eTA নিয়ে কিছু কথা ও শেয়ার করলাম ,সবাই মনোযোগ দিয়ে পড়বেন প্লিজ ।

বাংলাদেশের মিডিয়ায় কানাডায় সিটিজেনশীপ, পি আর,শর্ত ছাড়াই সহজ এন্ট্রি ‘র চটকদার বিজ্ঞাপন

এত বড় বিরক্তিকর লিখাটার জন্য আমি দুঃখিত আর আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলাম ,আশা করি ক্ষমা করবেন । কষ্ট করে ধৈর্য ধরে লিখাটা পড়ার জন্য সবাইকে অনেক অনেক ধন্যাবাদ । অনুরোধ রইল লিখাটা শেয়ার করবেন তাহলে কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন বা ভিসা এর আবেদন এর জন্য কি করবেন না করবেন সেটা বুঝতে হয়তো আনেকের সাহায্য হবে ও উনারা বারবার চিন্তা করে জেনে বুঝে আবেদন করবেন । আর সব জেনে বুঝে আবেদন করলে , উনাদের টাকা ও সময় অযথা নষ্ট হবে না । সবার স্বপ্ন সফল হোক ; সঠিক প্রসেস কিভাবে হয় সেটা জেনে সঠিক উপায়ে কানাডাতে আসুন এই কামনা রইল । পরিশেষে একটা কথা বলি আপনারা কানাডাতে আসলে বা না আসলে আমার কোন ক্ষতি হবে না বা লাভ ও হবে না । তবে আমার এই লিখা থেকে কেউ উপকৃত হলে হয়তো বা আমার এটাই লাভ হবে যে , কখন ও আপনারা নিজের অজান্তেই হয়তো বলবেন আপুর লিখাটা পড়ে জানতে পারায় আমাদের টাকা বাঁচল , অথবা বলবেন আপুর লিখা পড়ে জানতে পারায় আমরা সঠিক ভাবে আবেদন করে কানাডাতে আসতে পারলাম । বলা তো যায় না আসার পর কখন ও দেখা ও হতে পারে । আমার লিখা পড়ে আপনাদের যদি কোন উপকার হয় সেটাই আমার সার্থকতা , আমার আনন্দ । আর কেউ উপকৃত না হলে ও আমি দুঃখিত নয় । আমি যে আপনাদের কে সত্য টা জানাতে পেরেছি এটাই আমার আনন্দ ।

Courtesy:

Yasmin Chowdhury

ইয়াসমিন চৌধুরী (লেখকের ফেসবুক পোষ্ট)
https://www.facebook.com/groups/camigbd/permalink/1748151051895530/

পর্ব ০৭ঃ কানাডায় সফল হতে চান? চাবি আপনার পকেটেই!

সার্ভাইভিং জব ইয়ানিকি বেঁচে থাকার জন্য চাকুরী।

গড়পড়তা যারা দেশে ভালো আছেন মূলত তারাই উন্নত দেশে স্কিল কোটায় ইমিগ্রেশনের সুযোগ পান। ইমিগ্রেশন প্রসেসের লাইফ সাইকেলের বিভিন্ন ধাপে যাদের কাগজে ঘাপলা আছে তারা ঝরে পরেন। মনে রাখতে হবে আপনি প্রিভিলাইজড বলেই কানাডিয়ান সরকার আপনার পেছনে সময় আর অর্থ দুই ই ব্যয় করেছে আর ওরা এটাও চায় আপনি কানাডিয়ান ইকোনমিতে কন্ট্রিবিউট করুন।

কিন্তু সমস্যা হলো আফটার এরাইভাল শকটা অনেকটা হড়কা বানের মতো! হড়কা বান বুচ্চেন তো? আপনি দুই হাতে টাকা উড়াতেন, নিজের গাড়ী ছিলো, ভালো চাকুরী ছিলো, সারাক্ষন পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদের সান্নিধ্যে থেকেছেন যার কারণে বিষণ্ণতা আপনাকে কখনো স্পর্শ করেনি।

কিন্তু নতুন দেশে ভিন্ন পরিবেশে বৈরী আবহাওয়ায় এসে অনেকেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসেন। প্রথম দুই সপ্তাহ থেকে শুরু করে এক মাস পর্যন্ত আপনার সব কিছু ভালো লাগবে। ইমিগ্রেশন লাইফের এই সময়কে বলা হয় ‘হানিমুন’। গেবন মতান্তরে জীবন অনেক সুন্দর, রাস্তাঘাট পরিস্কার, পাড়ায় পাড়ায় সবুজ মাঠ, গাঢ় নীল আকাশ, বাতাসে নেই সীসার ঝাঁঝালো গন্ধ!

বুক ভরে দম নিতে পারবেন, কালচে ছানি পড়া ফুসফুস আবার জীবন শক্তি ফিরে পারে!

মুহতারামে হাজিরিন…

বাতাসে দম নিয়ে তো আর পেট ভরবে না। মাস খানেক পার হলেই তখন সার্ভাইভিং স্টেজে আপনি অবতরণ করবেন। আপনি চাকুরী পাবেন কি পাবেন না এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার প্রস্তুতির উপর। কিছু আদমকে আমি দেখেছি, দেশে থাকতে এরা কানাডা আসার স্বপ্নে এতোই বিভোর থাকতো, আসল যে প্রস্তুতি দেশে থাকতেই নেয়ার কথা ছিলো সেখানেই এদের খামখেয়ালী! আদতে এই গুষ্টিই বাতাসে মাতম ছড়ায়, এরে ওরে ফোন করবে…

আর কইস না দোস্ত, হালার পোত কানাডা নিয়া আসছে কিন্তু এখানে পর্যাপ্ত চাকুরী নাই!

পুরাই ধান্দাবাজী ইত্যাদি ইত্যাদি…

এমন কেউ আপনার আশে পাশে থাকলে ৩০০ গজ দূরে থাকুন। এরা আপনার বন্ধু বান্ধব হলে হর্ন দিন, কারণ এরা হুদাই আপমার কনফিডেন্স নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে।

বেশ কিছুদিন আগে এক দোস্ত ফোন দিলো…

বন্ধু আমার কি প্রস্তুতি নিলে কানাডায় চাকুরী পাইতে সহজ হবে।

ভালো কথা, বান্দার লিঙ্কড ইন ঘেটে যুতমত একটা সার্টিফিকেশন সাজেস্ট করলাম। সে তো মহা খ্যাপা!

তুই জানস এই সার্টিফিকেশন করতে কতো টাকা লাগে?

উহু, সেটা আমি জানি কিন্তু এই দেশে বউ আর এক বাচ্চা নিয়ে বেকার কাটালে গড়পড়তা আপনার ২০০০ কানাডিয়ান ডলার খরচ হবে মানে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা! কে শুনে কার কথা, বান্দা কানাডা এসছে ৩ মাস হলো, টানা ৩ মাস বেকার থেকে এখন টিম হর্টন কফির দোকানে ক্যাশিয়ার। সমস্যা এখন সে তার নির্বুদ্ধিতার জন্য মাথা চাপড়াচ্ছে। এমনিতেই বিরূপ আবওয়ার কারণে এখানে চুল পরে একাকার, এর মধ্যে বান্দা আলগা টেনশন নিয়ে দিগ্বিদিক ছুটে বেড়াচ্ছে।

মুহতারামে হাজিরিন…

সময় থাকতে নিজের স্কিল, অভিগ্যতা আর কানাডায় আপনার প্রসপেক্ট নিয়ে পড়াশোনা করুন। নিজেকে তৈরী করার জন্য যদি কিছু ট্রেনিং বা সার্টিফিকেশন করতে হয় তাহলে পিছ পা হবেনা। কানাডায় এক মাস বেকার থাকা মানে গড়ে ১ লাখ টাকা প্রতি মাসে ফুরুত করে চলে যাবে। ঝার ফুকেও কোনো কাজ হবে না!

কিন্তু এই নিজের গ্রহণযোগ্যতা কানাডায় কতটুকু বা কি সার্টিফিকেশন করবো সেটাই বা বুঝবো কেমনে?

হুম, আবার টোটকা চাচ্ছেন!

সহজ উপায় বাতলে দেই। ইন্ডিড, মন্সটার আর লিঙ্কডইন এই তিনটা ওয়েবসাইটে দিনে গড়ে আধা ঘন্টা থেকে ৪৫ মিনিট ব্যয় করবেন। ভালো করে দেখুন আপনার অভিগ্যতার ডিমান্ড কোথায় কেমন। সব প্রভিন্সে সব চাকুরীর সমান ডিমান্ড না। আপনার যদি আইটি নিয়ে অভিগ্যতা থাকে তবে আপনি খুজেবেন টরোন্টো কিংবা মন্ট্রিয়ালে, ম্যানিটোবা খুঁজে ফায়দা হবে না।

আরো স্মার্ট প্লে করতে চান?

এতো যে ফ্রি বুদ্ধি দিচ্ছি কই কেউ তো ইনবক্সে একদিন কইলেন না, দেশে আসলে কাচ্চির দাওয়াত :p

যাউজ্ঞা, খুব সহজ কিন্তু ইফেক্টিভ একটা সলিউশন দিচ্ছি। আজকেই লিঙ্কডইনের প্রিমিয়াম একাউন্ট খুলে ফেলবেন। প্রথম মাসে ফ্রি ট্রায়াল পাবেন কিন্তু পরবর্তি প্রতি মাসেই আপনাকে মাসিক ফি বাবদ ৩০ কানাডিয়ান ডলার ব্যয় করতে হবে। বাংলাদেশী টাকায় মনে হয় ১৮০০ টাকার মতো।

১৮০০ টাকা মাসে?

হুর মিয়া, সাইজের ইলিশ মাছের দাম ও তো এর থেকে বেশী!

আচ্ছা বুঝলাম, তারপর…

লিঙ্কড ইনে প্রিমিয়াম একাউন্ট থাকলে আপনার কাছে হাজারো রকমের স্ট্যাটিসটিক্স ইয়ানিকি পরিসংখ্যান চলে আসবে। ধরুন, আপনি প্রোগ্রামার হিসাবে কোনো কোম্পানীর চাকুরীর সার্কুলার দেখছেন। তখন লিঙ্কডিন আপনাকে বলে দিবে, এই কোম্পানীতে লোকজন গড়ে কতদিন টিকে কিংবা এই পজিসনের গড় মাইনে কত। এছাড়া ও বেশ কিছু মজার স্ট্যাটিস্টিক্স পাবেন, যেমন এই পজিশনে এখন পর্যন্ত যারা এপ্লাই করেছে এরা কোথাকার? তাদের প্রফেশন কি? এবং সবচেয়ে উপকারী এলিমেন্ট হলো আপনার স্কিল সেট এই পজিশনের সাথে কতটুকু ম্যাচ করে তা বলে দিবে। মানে হলো যে সকল স্কিল সেট আপনার সাথে ম্যাচ করেনা আপনার তা নিয়ে কাজ করতে হবে। এমনকি যারা এপ্লাই করেছে তারা আপনার থেকে কতখানি এগিয়ে আছে সেটাও জানতে পারবেন।

আসল টোটকা এখনো বাকি!

আপনি স্পষ্ট দেখতে পারবেন ঐ কোম্পানীতে আপনার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু / বান্ধবী কিংবা আপনার বর্তমান বা পূর্ববর্তি অফিসের কলিগ কারা কারা কাজ করছে!

ব্যাস!

শুরু হোক নেটওয়ার্কিং!

ফোন, হোয়াটসাপ, ভাইবার, ফেবু এমনকি পারলে কবুতর দিয়া চিঠি পাঠাইয়া হইলেও দোস্তের সাথে যোগাযোগ করেন। এখানে কিপ্টামি বা সংকোচ করবেন না। যেনে নিন ঐ কোম্পানির হাল হকিকত। আমি আগের কোনো এক পর্বে বলেছি, এই মুল্লুকে রেফারেন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপানার বন্ধু চাইলেই কোম্পানির ক্যারিয়ার পোর্টাল থেকে আপনাকে রেফারেন্স দিতে পারে। উল্লেখ্য কানাডার প্রায় সকল কোম্পানীতেই সিস্টেমে এন্ট্রি দিয়ে রেফার করা হয়। আর তা করতে পারে ঐ কোম্পানীর বর্তমান এম্পইরাই।

বুচ্ছেন তো ব্যাপারটা?

কোন চিপায় কোন দোস্ত আছে পাতা লাগান আর খুঁজে বের করার প্রাথমিক উপায় তো বলেই দিলাম, লিঙ্কড ইন!

আল্লার কসম লাগে কেউ আবার ইনবক্সে জিগাইয়েন না…

ভাই লিঙ্কডইন আপ্নেরে কত ট্যাকা দিসে মার্কেটিং এর জন্য!

যাউজ্ঞা!

নানা মুনির নানা মত থাকবেই ভাই। আমি যে পন্থা আপনাকে বাতলে দিয়েছি সেটা আপনার ভালো নাও লাগতে পারে। আমি শুধু আমার স্বল্প অভিগ্যতা দিয়ে অন্ধকারে রাস্তা দেখানোর চেষ্টা করছি। সমস্যা হলো অন্ধকার নিয়ে কেউ কথা বলে নারে ভাই, সবাই শুধু আলোই দেখতে চায়! আলো ইডিট করাই যায় ভাউ অন্ধকার না!

মুহতারামে হাজিরিন…

নূন্যতম ৬ মাস যাতে পায়ের উপর পা তুলে দরকার হলে টেবিলে পা তুলে খেয়ে পরে থাকতে পারেন সেই সমতুল্য টাকা অবশ্যই নিয়ে আসবেন। কইত্তে আনবেন জানিনা। আমার থিওরি হলো আপনি যদি প্রথম চার মাস চাকুরী নাও পান তবু সার্ভাইভিং জবে ঢুকবে না। আপনার আশে পাশে অনেকেই দেখবেন প্লেন থেকে নেমেই ম্যাকডোনাল্ডস এ চাকুরী পেয়েছে। মন খারাপ করার কিছু নাই, আপনি ফোকাস করবেন আপনার ডোমেইনে। যথাযথ প্রক্রিয়া আর স্ট্র্যাটেজি ফলো করে আবেদন করতে থাকবেন, কিভাবে করবেন এই টোটকা আগের কোনো এক পর্বে বলে এসেছি।

কিন্তু কেন সার্ভাইভিং জব নয়? মানে ওয়াল মার্টে কাজ করে কিছু আয় ও হলো পাশাপাশি নিজের ডোমেইনে চাকুরী খুজলাম?

হুম, সে আপনি করতে পারেন, এতে দোষের কিছু নাই।

কিন্তু আমার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। এখানে সার্ভাইভিং জব মানে ওয়ালমার্ট, টিম হর্টন, ম্যাকডোনাল্ডস, সেভেন ইলেভেন, কানাডিইয়ান সুপার স্টোর ইত্যাদির কাজ। কাজ কিন্তু যথেষ্ট কায়িক পরিশ্রমের, দেশে থেকে যে মেদ আর ভুড়ি বানিয়েছেন দাদা, ও কাজ করতে গিয়ে চোখের জল নাকের জল এক হয়ে যায়। সারাদিন এই খাটা খাটনির পর বাসায় গিয়ে ল্যাপটপে বসে আপনার আর চাকুরী খোজার তেল থাকবে না। ঠিকঠাক মতো একটা জবে এপ্লাই করতে নূন্যতন দুই ঘন্টা লাগবেই!

সার্ভাইভিং জবে বরাবরই নূন্যতম মজুরী দেয় মানে গড়ে ১০ থেকে ১৩ ডলার যা প্রভিন্স ভেদে উঠানামা করে। মানে আপনি যদি ফুল টাইম সার্ভাইভিং জব করেন তাহলে আপনিখুব সহজেই সংসার চালিয়ে নিতে পারবেন তবে তা অনেকটা দিন আনি দিন খাই স্টাইলে। দেশে টাকা পাঠানো বা জমানোর কথা ভাবাও ক্রাইম! আবার অনেকে এই জবেই সাময়িক আরাম পেয়ে আর মেইন স্ট্রিমে চাকুরী খুজেন না আর এতে করেই তিল তিল করে আপনার জমানো অভিগ্যতা হাওয়ায় উবে যায়। কয়েক মাস গেলেই তখন উপলব্ধি হয়, মামুর ব্যাটা, হেইয়া আমি কি করলাম! ততদিনে মাস ছয়েক পার হয়ে গেছে, যে বান্দা মাস ছয়েক মেইন স্ট্রিমে ছিলো না সে এমনিতেই রিক্রুইটারের খাতায় বাতিল মাল হয়ে যায়!

এই অল্প কদিনেই চোখের সামনে দেখলাম কত বাঘা বাঘা ডাক্তার ইঞ্জিয়ার আর কর্পোরেট প্রফেশনাল যারা তাদের শৌর্য জলাঞ্জলি দিয়ে দিনের পর দিন সার্ভাইভিং জবে টিকে থাকার জন্য ক্রমাগত লড়ে যাচ্ছেন।

জানেন তো কানাডায় সবচাইতে বেশী পিএইচডি হোল্ডার ট্যাক্সি চালায়!

এখন আপনিই সিদ্ধান্ত নিবেন, আপনি কি বাতিল মাল হতে চান নাকি এখন থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে কানাডা এসে চিল করতে চান?

মুস্তফা গেইম খেলসেন কখনো? কসাই বা ব্লেডকে চিপায় ফেলে ধুমাইয়া কিলাইতাম। কিন্তু পরের স্টেজেই দেখতাম আগের স্টেজের বস হালি হালি এসেছে! কিন্তু ঐ যে আগের স্টেজে জানতাম হেরে কেমনে সাইজ করতে হয়। বাকিটা ইতিহাস। লাইন ঘাট জানলে আর গুছিয়ে এগুলে আপনি ও জ্যাক, মেস আর হেনাকে নিয়ে শেষ স্টেজে চিল করতে পারবেন!

কিন্তু জ্যাক, মেস আর হেনা আপা এরা কে?

ধুর মিয়া, আপ্নে কোনো কামের না!

মুহতারামে হাজিরিন!

সিদ্ধান্ত আপনার, চাবি আপনার হাতেই!

ভাগ্য এক আনা কন্ট্রোল করতে পারে, পনেরো আনাই আপনার হাতে!

আর যারা যার কাচ্চির দাওয়াত দিবেন জানাইয়েন 😉

কাচ্চি? কিসের কাচ্চি!

হায়রে…

Courtesy:

Akhlaqur Rahman Rahi

পর্ব ০১: https://goo.gl/Tt6RfL
পর্ব ০২: https://goo.gl/D7ubwX
পর্ব ০৩: https://goo.gl/UHX3rg
পর্ব ৪ঃ https://goo.gl/ZAbwMc
পর্ব ০৫ঃ https://goo.gl/56gUiy
পর্ব ০৬ঃ https://goo.gl/gNPfjH
পর্ব ০৭ঃ https://goo.gl/Q7CXGa
পর্ব ০৮ঃ https://goo.gl/C5UqFg
পর্ব ০৯ঃ https://goo.gl/tgvPS1

কানাডা যাবেন ???

#কানাডা_যাবেন ???

হ্যা যামু ভাই। যতটাকা লাগে দিমু ভাই কানাডা আমি যেতেই চাই কিন্তু একদম নিয়ম অনুযায়ী আমাকে ভিসা করে দিতে হবে।

জ্বি ভাই পারুম। আমার কাছে লোক আছে। ১২ লাখ টাকা দিলে একদম ১০০% vfs এ পাসপোর্ট জমা দিয়ে ভিসা করাই দিমু।

আমি রাজি।

উপরের এই কথা গুলো হয়ত এই দেশের সহজ সরল হাজার মানুষের কষ্টে ভরা প্রতারণার শুরুর গল্প। আমি আজ ঠিক এমন এক গল্প আপনাদের শোনাতে চাই। জানি শুনিয়েও লাভ নাই কারন আপনারা ১২ লাখ খরচ করে দেশে কিছু করতে না পারলেও বিদেশে কামলা দিতে পারবেন।

আমার এক পরিচিত ছেলে। শুনলাম সে কানাডা যাচ্ছে। খুব ভাল খবর। কিন্তু আমার বিশ্বাস হলো না। যোগ্যতা অনুযায়ী ম্যাচ করাতে পাড়লাম না। তবে পরে জানতে পাড়লাম টাকার বিনিময়ে যাচ্ছে। টাকা দিলে যেখানে সব সম্ভব সেখানে ভিসা!!! তবে যেই কানাডা ঘুরে এসে তাকে নিয়ে আমি এত সুন্দর ভ্রমণ গল্প লিখেছিলাম আজ সেই কানাডার মানুষ গুলোও এমন কাজ করে তা শুনে কষ্ট লাগলো। যাইহোক ছেলেটি চলে গেল দিল্লি। কারন ভিসা নাকি সেখান থেকেই করাতে হবে। সেখানে তার সকল কাগজ আছে। তারমধ্যে উল্লেখ্য কানাডা থেকে তার জন্য Work permit ডকুমেন্ট এসেছে। এই সকল ডকুমেন্ট একত্রিত করে সে সয়ং নিজে দিল্লি vfs পাসপোর্ট জমা দিয়েছে। ফিঙ্গার প্রিন্ট, ছবি তোলা থেকে শুরু করে সকল কার্যক্রম দিল্লির vfs করেছে। জমা শেষে তাকে প্রিন্ট দিয়ে ভিসা ট্রাকিং নম্বর পর্যন্ত প্রদান করেছিল। এই সকল কার্যক্রমে কোন প্রকার ভুয়া আপনি বলতে পারবেন না। ছেলেটি একমাস দিল্লি হোটেলে থাকলো। কত আশা কত স্বপ্ন। একমাস পর ম্যাসেজ আসলো vfs থেকে তার পাসপোর্ট ডেলিভারি নেওয়ার জন্য।

নিজে vfs যেয়ে ইন্ট্যেক্ট খাম খুলে দেখলো পাসপোর্ট এ দুই বছরের work permit visa। মহা খুশি সে। আমাকে বলে ভাই ভিসা পেয়ে গেছি। আমার বিশ্বাস কিছুটা বাড়তে থাকলো। imo তে ভিডিও কলে vfs জমা দেওয়ার দৃশ্য আমাকে দেখিয়েছিল আর এখন সেখান থেকেই ভিসা। যাইহোক সব টাকা পেমেন্ট করে দেশে এসেছেন। তাকে সেখান থেকে work permit কাগজ দিয়ে দিয়েছে যা নাকি এয়ারপোর্টে লাগবে।

ছেলেটি দিল্লি থেকে দেশে আসলো। খুশির সাথে শপিং শুরু করলো, ডলার কিনলো, টিকিট কাটলো। সংসারের কষ্টের টাকা খরচ করে শেষ পর্যন্ত একটা উপায় হলো।

পরিবার থেকে বিদায় নিয়ে এয়ারপোর্ট গেলো। এয়ারলাইন্সে পাসপোর্ট জমা দিতেই তারা বলে উঠলো এই ভিসা কোথা থেকে পেয়েছেন? এটিতো ভুয়া ভিসা। ছেলেটির খুব আত্মবিশ্বাস। সে মানতে রাজি না। তর্ক শুরু করে চ্যালেঞ্জ করলো। এয়ারলাইন্স পাসপোর্ট নিয়ে ইমেগ্রেশনে গেলেন। সেখান থেকেও একই নিউজ আসলো। তারা তাকে এয়ারপোর্ট থেকে বেড় হয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলো কিন্তু তিনি রাজি না হওয়াতে বলল আপনি কিন্তু এখন এরেস্ট হয়ে যাবেন। যাইহোক সে ফিরে আসলো। সে এখনো কনফিডেন্ট যে তার ভিসা জেনুইন এবং দালাল বলেছে সে যেতে পারবেই।দোয়াকরি তার সেই আশা যেন পূর্ণ হয়।

আমার গল্প এখানেই শেষ। দয়াকরে ম্যাসেঞ্জারে হাজার প্রশ্ন আমাকে করবেন না। আমি এই ভিসাতে আদৌ বিশ্বাসী ছিলাম না এবং সামনেও হবো না। যারা টাকা দিয়ে নিজের দেশে কিছু করার ক্ষমতা রাখেন না আর বলদের মত দালালির মধুর কথাতে গলে পড়েন তারা আপনাদের টাকা যেখানে খুশি সেখানে ফেলুন তার বুদ্ধি আমি দিতে পারবো না। ফেসবুকে পরিচিত হয়ে সেই আমাকে অনেকেই লাখ লাখ টাকা দিয়ে দিতে চায় ভিসার জন্য। এখন বুঝেন এই দেশের মানুষ এখনো কত সহজ সরল আছেন?

তবে গ্রুপের এ্যাডমিন প্যানেলের উদ্দেশ্যে আমার প্রশ্নঃ

vfs হচ্ছে কানাডার অফিসিয়াল এজেন্ট। যার মাধ্যম ছাড়া ভিসা সম্ভব নয়। অথচ সেই vfs দালালদের মাধ্যমে তাদের কাছে পাসপোর্ট জমা নিয়ে পরবর্তীতে ভুয়া ভিসা দিয়ে প্রতারণা করছে। এই খবর কানাডার ভিসা অফিস কি জানেনা? এই নিউজ কি কানাডা দেওয়া সম্ভব নয়? তারা যতই বলুক এই সকল বিষয় যার যার দেশের ইন্টারনাল ব্যাপার কিন্তু তাদের নিয়োগ দেওয়া এজেন্ট যখন জড়িত তখন তার দ্বায়ভার থেকে তারা বাদ পড়তে পারেনা। তারা কেন vfs এর পরিবর্তে নিজেদের এ্যাম্বাসীতে পাসপোর্ট জমা নিবেন না?

ধন্যবাদ।

Courtesy:

Miah Mizanur Rahman Kazol 

 

Original post: https://www.facebook.com/groups/camigbd/permalink/1748036695240299/

পর্ব ০৫ ঃ কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা?

কিছু দিন আগে এক ভাই ইনবক্স করেছেন, ছদ্ম নামে উনার জিজ্ঞাসার খন্ডিতাংশ নিচে তুলে ধরলাম।

“ব্রাদার, আসসালামু আলাইকুম। পরসমাচার এই যে, গতকাল আমার মামা সুদূর কাতার থেকে দিবাগত রাত ৩টায় হন্তদন্ত হয়ে আমাকে ফোন দিয়েছেন! উনার সাথে আমার কানাডায় ওয়ার্কার ভিসা নিয়া যে বাতচিত হইয়াছে তা হুবুহু তুলে ধরলামঃ

“ক্রিং ক্রিং…

হ্যালো হ্যালো মোখলেস তুই কই?

কই মানে? এতো রাইতে আবার কই থাকুম মামু?

ওরে গাধা, কানাডায় লাইন ধরে ওয়ার্কার ভিসায় লোক নিচ্ছে, এক্ষুনি তালাস লাগা। কতটাকা আর কারে ধরতে হবে তাত্তারি জানা, ভিসা শেষ হয়ে গেলে আর পাবি না।”

মুহতারামে হাজিরিন, সুদীর্ঘকাল থেকেই রুটিরুজির আশায় বেঙ্গল থেকে মানুষ বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। কেউ নৌকায় সাগর পাড়ি দিয়ে তো কেউ দালাল ধরে আরব্য রজনীর আলো ঝিলমিল কাতার, দুবাই, সৌদি কিংবা হালের মালয়েশিয়ায়।

ভালো কথা, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করার সাথে সাথে কক্সবাজারের শ্রমজীবি মানুষেরা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় উঠে পরে লেগেছে। রোহিঙ্গারা নাকি যেকোনো পারিশ্রমিকে দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালানোর জন্য হন্যে হলে শহরময় ঘুড়ে বেরাচ্ছে।

চিন্তার কথা!

পুরান পাগল ভাত পায় না, আবার নতুন পাগল এসে জুটেছে?

এখন কথা হলো কানাডা কেন আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট দিবে? আর ওয়ার্ক পারমিট এর মাজেজাই বা কি?

আসেন কেইস স্টাডি করি। এই যে বাংলাদেশ থেকে এয়ার এশিয়া আর মালিন্দ ভরে ভরে ওয়ার্ক ভিসায় মালয়েশিয়া লোক যাচ্ছে তার রহস্য ঘাটতে মোল্লা নাসির উদ্দিনকে লাগবে না। খুব সহজ সরল ক্যালকুলেশন, অল্প টাকায় শ্রম! কাতার, দুবাই, কুয়েত, বাহরাইন আর মালয়েশিয়ার মত দেশেই প্রবাসী শ্রমিক (আনস্কিল্ড) বেশী! রেমিটেন্স বা বৈদেশীক মুদ্রার ইনফ্লো দেখলেই বুঝতে পারবেন এসব দেশ থেকেই বড় অংকের টাকা দেশে আসছে। কোনো দেশই তার নিজের টেনজিবল ফায়দা ছাড়া ওয়ার্ক পারমিট দেয় না। আবার উন্নত বিশ্বে আপনি চাইলেও কম টাকায় শ্রমিক খাটাতে পারবেন না। উলটা পালটা করছেন তো পরের দিনই আপনি গারদে!

কানাডার শতকরা ৭ শতাংশ মানুষ বেকার। সিম্পল পাটি গণিত কষলে দেখা যায় সে সংখ্যাটা প্রায় ২৫ লাখে গিয়ে ঠেকে! আশ্চর্য, যেখানে ২৫ লাখ মানুষ বেকার সেখানে অনুন্নত বিশ্ব থেকে ওয়ার্কিং ভিসায় লোক আনার প্রশ্নই উঠে না! তবে হ্যাঁ, কানাডা স্কিল্ড লোকজন নিচ্ছে কারণ এই মুল্লুকে স্কিল লোকের বড়ই অভাব। বিভিন্ন প্রভিন্স তাদের জব মার্কেট এনালাইস করে বিভিন্ন স্কিমের মাধ্যমে লোক নিচ্ছে যার একটা বড় অংশ ফেডারেল গভরমেন্টের এক্সপ্রেস এন্ট্রি পোগ্রামের মাধ্যমে প্রসেস হয় তো বাকিটা প্রভিন্সের নিজেদের প্রোগ্রাম দেখভাল করে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় অনলাইনে আর এপ্লাই করার সুযোগ তারাই পাবেন যাদের আইইএলটিস এবং নূন্যতম এক বছরের কাজের অভিগ্যতা আছে।

তাহলে ওয়ার্ক ভিসা?

হুম, কানাডা সত্যিই ওয়ার্ক ভিসা দেয় তবে অংকটা বেশ জটিল!

প্রথমত চিন্তা করে দেখেন আমার আপনার মধ্যে এমন কি আছে যা কানাডার মানুষের মধ্যে নাই? কথা সত্যা! সহজ ভাষায়, কানাডিয়ান এমপ্লয়ার তখনি আপনাকে নেবার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করবে যখন আতসী কাচ দিয়ে খুঁজে তার মন মত লোক কানাডায় খুজে পাবে না! কিন্তু সেটাই বা কেমনে সম্ভভ!

সম্ভব!

ধরুন,ধরুন কানাডার টরেন্টোতে সিলেটের সাতকরা রেসিপি দিয়ে নতুন এক রেস্টুরেন্ট খোলার কথা ভাবছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী! কিন্তু সিলেটের সাতকরা তৈরী করতে হবে এমন পাকা রাধুনী শুধু সিলেটের জল্লার পারের ১৩/বি বাসার কুদ্দুসই পারে। মোদ্দা কথা, কুদ্দুস ছাড়া এই রেস্টুরেন্ট চলবে না!

কুদ্দুসকে চাই ই চাই।

এবার কুদ্দুসকে রিক্রুট করতে হলে বেশ কিছু পেপার ওয়ার্ক এবং প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। প্রথমত রেস্টুরেন্টের মালিককে কানাডার সরকারী জব পোর্টাল জব ব্যাংকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। শুধু তাই না, পাশাপাশি আরো দুটি জব পোর্টালে চাকুরীর সারকুলার দিতে হবে। ভালো কথা, গাদা গাদা সিভি থেকে বাছাই করে মালিক পক্ষকে ইন্টারভিউ নিতে হবে। এই ইন্টারভিউর আবার প্রমাণ রাখতে হবে। মালিক পক্ষকে প্রমাণ করতে হবে ইন্টারভিউ নেবার পরও সাতকরা রান্না করতে পারে এমন লোক খুঁজে পাওয়া যায় নি! এবার মালিক, যথাযত কাগজপত্র নিয়ে লেবার মার্কেট ইমপেক্ট এসেসন্টের জন্য আবেদন করবেন। জুড়ী টিম যাচাই বাছাই করে দেখবে সত্যিই কি কানাডায় এমন কোনো আদম নাই যে সাতকরা বানাতে পারে আর রেস্টুরেন্টে কাজ করতে ইচ্ছুক!

এমনকি আপনি যে কুদ্দুসকে বেতন দিয়ে কানাডায় আনবেন সেই বেতন কানাডার পে স্কেলের সাথে সামঞ্জ্যশ্য কিনা সেটাও খুটিয়ে দেখা হবে। মালিক সত্যি সত্যি লোক খুঁজে পায় নাই না কুদ্দুস মালিকের ভায়রা ভাই সেটাও খুটিয়ে দেখা হবে। এরকম বেশ কিছু এলিমেন্ট চেক করার অথরিটি কনভিন্স হলে তখনি ওয়ার্ক পারমিটের অনুমতি দেয়া হয়! এই এসেমেন্ট আবার ফ্রি না, এর জন্য মালিক পক্ষকে টাকা গুণতে হবে! এখন কথা হলো, আদতে এই প্যার নিয়ে কোনো মালিক পক্ষ বাংলাদেশ থেকে লোক নিবে?

উত্তর না।

তবে হ্যাঁ, এই দেশেও সিস্টেম সম্ভব।

কিছু এজেন্সি আর এলেবেলে কোম্পানী মোটা অংকের টাকার বিনিময় এই কাজ করে থাকে। ব্যাপারটা অত্যন্ত জটিল আর সময় সাপেক্ষ।

তবে আশা করি যারা ভেবেছিলেন গুলশানের কানাডা এম্বেসী থেকে লাইন ধরে ভিসা পাওয়া যাচ্ছে তাদের ভুল ভেঙ্গেছে।

এই ফোরামের বেশীরভাগই স্কিল ক্যাটাগরীতে এপ্লাই করছেন।

এই পোস্ট আপনাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। যারা আমাকে ইনবক্স করেছিলেন, কানাডা ওয়ার্ক ভিসা কোথা থেকে পাবেন তাদের জন্যই আসল চিত্র তুলে ধরা!

পর্ব ০১:https://m.facebook.com/groups/103145476396104?view=permalink&id=1613627335347903
পর্ব ০২:https://m.facebook.com/groups/103145476396104?view=permalink&id=1614699555240681
পর্ব ০৩:https://www.facebook.com/groups/camigbd/permalink/1617013041675999/
পর্ব ৪ঃhttps://www.facebook.com/groups/camigbd/permalink/1626204370756866/

 

Courtesy:

Akhlaqur Rahman Rahi 

Work in Canada | কানাডায় চাকুরী সমাচার

পর্ব ০৩ঃ কানাডায় চাকুরী সমাচার?
————————————————

চাকুরী কি কানাডাতেও সোনার হরিন?

আসনে কি পরিমান মানুষ কানাডায় হোমলেস (বাড়িঘর নাই) তার একটা উদাহরণ দেই।

প্রতি বছর গড়ে ২ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ কানাডায় হোমলেস থাকে। ২,৩৫,০০০ সংখ্যাটা খুব নগন্য লাগছে? কানাডা বাংলাদেশের চাইতে ৬৭ গুণ বড় আর লোকসংখ্যা? ইয়ে মানে বাংলাদেশে বাংলালিংকের যে পরিমাণ গ্রাহক আছে পুরো কানাডাতেও এই পরিমাণ আদম নাই!

শুধু কি তাই? আরো প্রায় অতিরিক্ত ৫০,০০০ লোক প্রতি বছর হোমলেস থাকে যারা আবার চুপা রুস্তম ক্যাটাগরির হোমলেস!

কিন্তু সে আবার কেমন?

এই ধরেন মাইন্সের বাসায় থাকে, ভাই ব্রাদারগো, মামা, চাচা এবং কি কাউচসার্ফিং (অবশ্যই গুগল করে বের করবেন এইটার মানে কি) করেও দিনের পর দিন পার করা আদমও এখানে আছে।

তাহলে সরকার কি করে?

গড়ে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা কানাডিয়ান সরকার প্রতি বছর ব্যয় করে এই হোমলেস মানুষদের ম্যানেজ করার জন্য!

তাহলে কি কানাডা কি বাস যোগ্য?

আসেন একটু পরিসংখ্যান নিয়ে ঘাটাঘাটি করি।

– আপনি কানাডা না থেকে বাংলাদেশে থাকলে ১১ বছর আগেই মারা যাবেন। (ভাই হায়াত মউত আল্লাহর হাতে, আমি শুধু পরিসংখ্যান এর কথা বললাম)

– হাসপাতালে দৌড়াইতে দৌড়াইতে বান্দা কাহিল। মুহতারামে হাজিরিন উইনাটেড/এপোলো/আর স্কোয়ারে আমরা কাড়ি কাড়ি টাকা ঢালি কারন সবার আগে জীবন। এখানে ঔষধ কিনে খেতে হলেও আপনি যদি কানাডা আসেন তাহলে হাসপাতাল খরচের শতকরা ৯৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ টাকা কানাডা সরকার আপনাকে সুস্থ করতে ব্যয় করবে।

– আপনি কানাডা আসলে আপনি খুন হওয়ার সম্ভাবনা ২ শতাংশ কমে যাবে (এখন ভেবে দেখেন বাংলাদেশে কি পরিমাণ মানুষ প্রতিদিন খুন হয়)

– আপনি কানাডা আসলে গড়ে এখন যা টাকা কামান তার চাইতে ৯৫ শতাংশ বেশী কামাতে পারবেন (খরচটাও কিন্তু সে হারে বাড়বে)

কিন্তু চাকুরী?

ধরুন আপনি বাংলাদেশের স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন থেকে সুনামের সাথে কাজ করছেন। শুধু আপনার কোম্পানিতেই না বরং পুরো ইন্ডাস্ট্রিতেই আপনার বেশ নাম ডাক। এবার একটু ভেবে দেখুন, বাংলাদেশেই কোনো এক সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনি একটা ইমেইল পেলেন যার বিষয় বস্তু আপনাকে কোম্পানী থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে!

নিঃসন্দেহে এই আপনি এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। গড়পড়তা বেশীরভাগের মানুষেরই প্রথম যে চিন্তা মাথায় আসবে তা হলো আগামী মাস থেকে বাসা ভাড়া দিবো কিভাবে? সদাই পাঁতির খরচ কিভাবে ব্যবস্থা করবো? লোনের ইন্সটলমেন্ট? ক্রেডিট কার্ডের বিল? বাচ্চার পড়াশোনা? বাবা মার খরচ? ইত্যাদি ইত্যাদি…

আপনার বর্তমান স্ট্যাটাস আপনি পরীক্ষিত কিন্তু বেকার? আপনার কি মনে হয় আপনি চাইলেই পরের দিন থেকে অন্য আরেকটি কোম্পানীতে যোগদান করতে পারবেন? উত্তরটা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই না! যদি নিজের চেনা জানা শহরে, পরিচিত মানুষের ভিড়ে চাকুরী পেতে বেগ পেতে হয় তাহলে আমাদের কি এমন ভাবনা থাকা উচিৎ যে নতুন এক দেশে, ভিন্ন পরিবেশে, হেঁসে খেলে আমি চাকুরী পেয়ে যাবো?

বাস্তবতা এখানে ভিন্ন!

আসুন কানাডার চাকুরী বাজার নিয়ে আলোচনা করা যাক। প্রথম কথা, কানাডায় যে পরিমান চাকুরী আছে তা বাংলাদেশের তুলনায় অঢেল! আই রিপিট অঢেল। কিন্তু পর্যাপ্ত প্রিপারেশন আর মার্কেট এনালাইসিসে নজর না দিলে এই অঢেল চাকুরীর বাজারেও আপনাকে হাবুডুবু খেতে হবে। তার চাইতে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এটিটিউড আর নিজেকে মানিয়ে নেয়ার মানসিকতা সাথে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নিজের নার্ভ শান্ত রাখাও সমান পরিমানে ইম্পরটেন্ট।

রিসার্চ?

হুম, বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ ভালো চাকুরী ঢাকা কেন্দ্রিক। আরো একটু ভেঙ্গে বললে উত্তরা থেকে মতিঝিল এর মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ। কানাডা মোটেও ছোট কোনো দেশ না, একটু ভূগোল নিয়ে নাড়াচাড়া করলে দেখবেন কানাডা বাংলাদেশের থেকে ৬৭ গুণ বড়! আই রিপিট ৬৭ গুণ!! কানাডা উন্নত দেশ, এখানকার ইনফ্রাস্ট্রাচার অত্যন্ত গোছানো আর চাকুরীর ক্ষেত্রেও তাই।

তাহলে সমস্যা কোথায়?

হুম, এবার আসি আসল কথায়। বাংলাদেশে একটা সময় বলা হতো মামা চাচা ছাড়া চাকুরী পাওয়া নাকি ক্লোজ টু ইম্পসিবল! যদিও এখন আর সেই দিন নাই। কিন্তু এই মুল্লুকে মামা চাচা ছাড়া উপায় নাই!

হোয়াট? আর ইউ কিডিং মি?

জি ভাই, এখানের প্রায় ৭০ শতাংশ চাকুরী হয় রেফারেন্সে। উঁহু, বাংলা রেফারেন্স না কিন্তু? তাহলে?

আচ্ছা আপনি নিজেই একবার চিন্তা করে দেখেন ৩০ মিনিটের একটা ছোট্ট ইন্টারভিউ দিয়ে একজন চাকুরী প্রার্থীকে যাচাই বাছাই করা আসলে সম্ভব? আপনে আমি বাংলাদেশের যতভালোই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি না কেন তার কোনোটাই বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং এ ধারে কাছে নাই! ব্যাপারটা অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য। কানাডায় রেফারেস্ন অত্যন্ত স্বীকৃত এবং বহুল প্রচলিত সিস্টেম যার মাধ্যমে বেশীরভাগ বড় বড় কোম্পানী নতুন কর্মী রিক্রুট করে থাকে। ইয়ে মানে, ব্যাপারটা এমন না যে আপনি মামা চাচা ধরলেন কিংবা বড় হোতা মোতা দিয়া ফোন করাইবেন আর কাম হইয়া যাইবো তা না! সব কিছুই এখানে সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়!

তাহলে? হুম, একটা উদাহরণ দেই, কানাডার সবচাইতে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর হচ্ছে “বেল” বা সব চাইতে বড় ব্যাংক হচ্ছে “আরবিসি”। ধরে নিলাম আপনার টার্গেট হচ্ছে বেল বা আরবিসি তে যোগদান করা। আপনার চাকুরীর অভিগ্যতা, ফরলাম এডুকেশন আর ট্রান্সফারেবল স্কিল পুরোদমে যে পজিশন অফার করা হয়েছে তার সাথে মিলে যায়। শয়ে শয়ে চাকুরী প্রার্থীর মতও আপনিও এপ্লাই করলেন। মুহতারামে হাজিরিন, আপনার সিভি পিক হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত নগ্যন্য। খুব সিম্পল, একটা পজিশনের এগেইন্সটে যদি ১০০০ সিভি জমা হয় কোনো হায়ারিং ম্যানেজারের বাপেরও সাধ্যি নাই এখানে থেকে আতসি কাচ দিয়ে খুজে টপ ৫টা সিভি আলাদা করার!

তাহলে?

টোটকা নাম্বার ১ঃ এখানে বেশীরভাগ কোম্পানীতে চাকুরীরত এমপ্লইরা চাইলেই তার পরিচিতজন কে জব ওপেনিং এর এগেইন্সটে রেফার করতে পারেন। সেটাও আবার সিভি প্রিন্ট করে এইচআর এর ডেস্কে রেখে আসা না জনাব! ঐ যে বললাম, সিস্টেম। হুম, ইন্টারনাল সিস্টেমে ইনপুট দিয়েই ভদ্রলোক আপনাকে রেফার করতে পারবেন। তখন পুরুত করে আপনার কাছে ইমেই চলে আসবে যে জবার অমুক আপনাকে রেফার করেছেন। সেই লিঙ্ক ধরে আপনাকে এপ্লাই করতে হবে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কোম্পানীগুলো ইন্টারনাল রেফারালদের কে ইন্টারভিউ এর সুযোগ দিয়ে থাকে। কিন্তু ব্রাদার এই পর্যন্তই কিন্তু, পুলসিরাত কিন্তু আপনাকে প্রমাণ করেই পার হতে হবে। নিজের যোগ্যতায় ইন্টারভিতে হায়ারিং ম্যানেজারকে কনভিন্স করতে পারলে তবেই আপনি চাকুরী পাবেন। যে ভাই বা আপা আপনাকে রেফার করেছেন উনার কাজ কিন্তু শেষ, তিনি আর কোনো ভাবেই আপনাকে সহযোগীতা করতে পারবেন না।

হুম বুঝলাম, কিন্তু হেতে আমারে রেফার করবো কেন?

ট্যাকা আর ট্যাকা ভাই! আপ্নে যদি হাসাই চাকরি পেয়ে যান তাহলে আপ্নারে রেফার করার কারনে সেই ভদ্রলোক একটা ইন্সেন্টিভ পাবেন যা গড়পড়তা ৫০০ থেকে ২০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে! কোনো কোনো কোম্পানীতে এই ইন্সেটিভটা বেশ লুক্রেটিভ!

সারছে, কানাডায় তো আমার কেউ পরিচিত নাই, তাইলে আমি কি শেষ?

ধুর মিয়া, আমি কি তাই কইসি!

টোটকা নাম্বার ২ঃ ইন্টারনাল রেফারালে পাশাপাশি প্রতিটি বড় কোম্পানী কোনোও না কোনো হায়ারিং এজেন্সির সাথে চুক্তি বদ্ধ থাকে। যেমন ধরুন আরবিসি এমন এক আদম খুজতেসে যে কিনা ফু দিলেই ক্রেডিট কার্ড বিক্রি হয়! ব্যাস, আরবিসি এজেন্সিকে বলে দিবে আমার আলাদিনের চেরাগ চাই তুই যেখান তে পাস খুইজ্জা নিয়া আয়। বলার সাথে সাথে, হায়ারিং এজেন্সি দূরবীন দিয়া তালাশ শুরু করবে। লিংকডিন, ইন্ডিড, মন্সটার, ওয়ার্কোপলিস ছাড়াও নিজেদের ওয়েবসাইট থেকে আলাদিনের চেরাগ লিখে সার্চ দিবে। যে কয়টা চেরাগ পাওয়া যায় সেখান থেকে ফু দিয়ে ক্রেডিট কার্ড বেচতে পারে তেমন ১০টা (গড়ে) আদম খুজে বের করবে। কিন্তু ফু কি দিলেই হবে? কেউ কুতাই কুতাই দরবেশ বাবার মত ফু দেয় তো কেউ এক ফু তে পগারপার করার মতো ফু দেয়! তাহলে?

এবার হায়ারিং এজেন্সি একে একে এই দশ আদমকে ফোন দিবে। এটাও এক ধরনের স্ক্রিনিং ইন্টারভিউ। এদের সাথে কথা বলে যে কয়টারে সুইটেবল মনে হবে তাদের আলাদা করবে (ইয়ে মানে “বেল” যেমন চাচ্ছে তেমন প্রোফাইল)। গড়পড়তা ২-৫টা রঙ চং করে প্রোফ্রাইল বেলের হায়ারিং ম্যানেজারকে সাবমিট করবে। এবার বেলের হায়ারিং ম্যানেজারের স্ক্রিনিং, ভাই চাইলে সব প্রোফাইল রিসাইকেল বিনে ফেলে দিতে পারে অথাবা পছন্দ হলে ইন্টারভিউ নিতে পারে। আর যদি আপনি সিলেক্ট হয়েই যান তাহলে আপনার মাসিক মাইনের উপর ভিত্তি করে হায়ারিং এজেন্সি কমিশন পাবে।

এইবার বুচ্ছেন ব্যাপারটা?

কিন্তু ভাই আমি তো দুই টোটকার একটাও কাজে লাগাতে পারি নাই।

কথা সত্য, হতেই পারে। কিন্তু তখন?

আপাতত পাওয়ার ন্যাপ (রেস্ট) নেন, বাদ বাকি পরের পর্বে…

পর্ব ০১:https://m.facebook.com/groups/103145476396104?view=permalink&id=1613627335347903

পর্ব ০২:https://m.facebook.com/groups/103145476396104?view=permalink&id=1614699555240681

Courtesy: Akhlaqur Rahman Rahi

কানাডাতে ওয়ার্ক ভিসাতে স্টার ভিত্তিক রেটিং সিস্টেম আসছে !!!

চলুন একটি সহজ প্রশ্নের উত্তর খুঁজি? আমাদের গ্রুপে কোন বিষয়ে আমরা সবচেয়ে বেশী প্রশ্ন পেয়ে থাকি? ঠিক ধরেছেন, জনপ্রিয়তম প্রশ্ন হচ্ছে কি করে জব ভিসা কিংবা ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কানাডা যাওয়া যায়, কি বলেন মিথ্যা বললাম কি?

আসলে আমাদের দেশে এই বহুল আলোচিত বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশী বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়, দুঃখজনক হলেও সত্যি এই ওয়ার্ক পারমিট কিংবা জব ভিসাটি অর্জন করা সবচেয়ে কঠিন এবং সবচেয়ে বেশী শর্তের মারপ্যাঁচে বন্দী, এবং আরও মারপ্যাচ আসছে কারন Temporary Foreign Work Programme এ চলমান LMIA এর শর্তের পাশাপাশি আগামী সোমবার ২৮ আগস্ট থেকে স্টার রেটিং বিষয়টি যুক্ত হতে যাচ্ছে। চলুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক পুরো বিষয়টা কি?

আগামী ২৮ আগস্ট থেকে যে স্টারভিত্তিক রেটিং সিস্টেমটি চালু হবে তার নাম দেয়া হয়েছে জব ম্যাচ। তাহলে কি এই জব ম্যাচ কি ওয়ার্ক পারমিট সিস্টেমে আমূল কোন পরিবর্তন নিয়ে আসছে? মোটেই না।
——————–
যে কোন নিয়োগকর্তা কানাডার বাইরে থেকে কর্মী নিয়োগ করতে চাইলে তাকে আগের মতই পজেটিভ LMIA সংগ্রহ করতে হবে।
নতুন চালু হওয়া জব ম্যাচ সিস্টেম নিয়োগকর্তাকে আবেদনকারীদের প্রোফাইল তাদের অগোচরে ভিসিট করার সুযোগ করে দেবেন। প্রতিটি জবম্যাচেই আবেদনকারীদের কে নিয়োগকর্তা ১থেকে ৫ এর মধ্যে মারকিং করার সুযোগ থাকছে। এই পদ্ধতিতে যে আবেদনকারী যত বেশী স্টার পাবেন তাকে ওই পজিশনের জন্য তত বেশী যোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে।
নূতন পদ্ধতিতে সকল চাকুরীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে ২ ভাগে ভাগ করা হবে।
উচ্চ বেতন- নিন্ম বেতন শ্রেণীবিন্যাস
—————————————-
যে সকল চাকুরীতে ওই প্রভিন্সের গড় আয়ের চেয়ে কম বেতন অফার করা হবে ওই গুলো কে নিম্ন বেতন হিসাবে শ্রেণীভুক্ত করা হবে।
যে সকল চাকুরীর বিজ্ঞাপনে বেতন ওই প্রভিন্সের গড় বেতনের চেয়ে বেশী বেতন অফার করা হবে ওই চাকুরীকে উচ্চ বেতন হিসাবে শ্রেণীভুক্ত করা হবে।
উচ্চ বেতন শ্রেণীভুক্ত বিজ্ঞাপন প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নিয়োগকর্তাকে ৪ বা তার অধিক স্টারধারী সকল জবম্যাচ আবেদনকারীদের ওই পোষ্টে আবেদন করা জন্য আহ্বান করতে হবে।
নিম্ন বেতন শ্রেণীভুক্ত চাকুরীর ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা ৩০ দিনের মধ্যে ওই পোস্টের জন্য ২ স্টার কিংবা তার অধিক স্টারধারী সকল জবম্যাচ আবেদনকারীকে ওই পোষ্টে আবেদনকরার জন্য আহ্বান করবেন।
————–
আমার মনের মাঝে একটি প্রশ্ন উকি ঝুকি দিচ্ছে যে আগের LMIA এর কঠিন শর্তের সাথে এখন এই নূতন স্টারভিত্তিক শর্ত যোগ হল, তারপরও কি আমরা নিয়মিত খুব সহজেই জব ভিসা/ ওয়ার্ক পারমিট এর সহজলভ্য ত্রুটিপূর্ণ বিজ্ঞাপনগুলো দেখতে পাব, আশাকরি খুব তাড়াতাড়িই এর অবসান দেখতে পাব।

শুভ রাত্রি।

Courtesy: Asraful Islam

https://www.facebook.com/groups/camigbd/permalink/1589966634380640/

 

%d bloggers like this: