কানাডায় নতুন যারা আসবেন/আসছেন

কানাডায় পাড়ি জমানো নতুনদের সবাইকে জানাই সু-স্বাগতম। জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। বসবাস, পড়ালেখা, ঘুরতে আসার জন্য উপযুক্ত এই সুন্দর দেশটা। এই লেখাটা মূলত নিউকামার ইমিগ্র্যান্টদের জন্য, যারা কানাডায় ল্যান্ড করবার জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছেন বা সদ্য এসেছেন।

নতুনরা অন্তত প্রথম চার মাস চলার মতো টাকা সাথে নিয়ে আসলে ভালো। প্রাথমিকভাবে একটা ছোট চারজনের পরিবারের মাসিক খরচ ২০০০ থেকে ৪০০০ ডলার হতে পারে [অবশ্যই ভিন্নতা/কমবেশি হবে শহর/স্থানভেদে, ব্যক্তি বিশেষ আর তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী। এটা একটা উদাহরণ মাত্র] এখানে সেরকম আত্মীয়স্বজন/বন্ধু না থাকলে এসে প্রথমেই একজন সমাজকর্মীর সহায়তা নিন। তিনি বিভিন্ন দিক দেখিয়ে দেবেন, বিনামূল্যে আপনাকে সহায়তা দেবেন। তাছাড়া এয়ারপোর্টে ইমিগ্র্যাশন অফিস আপনাকে গাইডেন্স, বুকলেটস দিয়ে দেবে। আপনি প্রাথমিক তথ্য পাবেন ওখানেই।

মোবাইল, ইন্টারনেট
===============
প্রথমেই একটা মোবাইল নাম্বার নিয়ে নিন। মাসে ২৫ থেকে ৪০ ডলারের মধ্যে পাবেন। তাছাড়া আপনার প্রয়োজন মোতাবেক ইন্টারনেট নিতে পারেন মাসে ৪০-৮০ ডলারের মধ্যে।
খাবার
=====
এখানে বড় শহরগুলিতে সব ধরণের খাবার, মশলা পাওয়া যায়। খামোখা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসার কোনো যুক্তি নাই। মা বাবা ভালোবেসে বেঁধে দিলে আলাদা কথা। হালাল দোকানের অভাব নাই। এমনকি বাংলাদেশী মাছ, সবজি, মশলা, চাল, গুড়, পান, ফলমূল নিয়মিত বাংলা দোকানে ইম্পোর্ট হয়ে আসে।
তথ্য সংগ্রহ
=========
২১১ নাম্বারে কল করে যেকোনো সোশ্যাল সার্ভিস, বাংলাদেশী কমিউনিটিতে যোগাযোগ করার তথ্য জেনে নিন নির্দ্বিধায়। ৩১১ এ কল করে সরকারি যেকোনো সংস্থার ঠিকানা/সহায়তা পেতে পারেন। তাছাড়া BCS অফিস এ [বাংলাদেশী কানাডীয়ান কমিউনিটি সার্ভিসেস] এ কল দিলে তারা হেল্প করবে। গুগল করুন শহর অনুযায়ী। BCCB তে সদস্যপদ হয়ে আসবেন ফেসবুকে। সেখানে অনেক উপকারী তথ্য পাবেন। এছাড়াও বেশ কিছু ফেইসবুকভিত্তিক গ্রূপ থেকে সহায়তা পাবেন।
আবাসন
=======
কানাডায় এখন বাড়ি ভাড়া আকাশচুম্বী। তাই পুরানাদের চাকচিক্য অবস্থার দিকে না তাকিয়ে নিজের সাধ্য মতো থাকবেন। আপনারও ভালো সময় আসবে একদিন।

এখানে অধিকাংশ পত্রিকাই ফ্রি। বাংলাদেশী কমিউনিটিতে থাকার প্ল্যান থাকলে বাংলা দৈনিক দেখে বাসা খুঁজে নিন। হাউজ-এ এক রুম এর বেজমেন্ট ৯০০ থেকে ১২০০ ডলারে পাবেন। অধিকাংশ বেজমেন্টে মালিকগণ ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ, পানি, আর লন্ড্রী সহ এই ভাড়া হিসাব করেন। আবার ব্যতিক্রম আছে। তবে মেইন ফ্লোরে ভাড়া অনেক বেশি।
.
আর যদি বড় বিল্ডিং এপার্টমেন্ট এ থাকতে চান, তাহলে এক রুমের এপার্টমেন্ট এর জন্য ১২০০ থেকে ১৬০০ ডলার গুনতে হবে মাসে [ শহর ভেদে ভিন্ন হবে ] ২ রুমের জন্য আরো ৩০০ – ৫০০ ডলার যোগ হতে পারে। সাথে বিদ্যুৎ, পার্কিং আর ইন্টারনেট বিল দিতে হবে।

মনে রাখবেন আপনার এবিলিটির ওপর থাকবেন। প্রথম প্রথম সবাই এখানে কষ্ট করেই থাকে। অনেকেরই একটা অভ্যাস আছে, বেজমেন্ট দেখলে তাচ্ছিল্য করেন। এটা একদম ঠিক নয়। সবার এবিলিটিকে রেস্পেক্ট করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে আসার আগেই কারও মাধ্যমে অন্তত প্রাথমিকভাবে বাসা ঠিকঠাক করে আসবেন। পত্রিকায় ব্যাচেলরদের জন্যও রুম/শেয়ার-রুম অ্যাড থাকে।
.
** মনে রাখবেন, কানাডায় এক রুমের বাসা/এপার্টমেন্ট মানে একটা বেড রুম থাকবে; সাথে একটা ড্রয়িং রুম আর কিচেন, বাথরুম থাকবে।
** সব বাসাগুলোতে রান্নার চুলা, ফ্রিজ দেয়া থাকে। আপনাকে এগুলো কিনতে হবে না। হিটিং সিস্টেম থাকবে।
** হাউজ বলতে সাধারণত ছোট ছোট কাঠের বাড়িগুলোকে বুঝায়।
** বিল্ডিং এপার্টমেন্ট বলতে সাধারণত বড় বড় কংক্রিটের মাল্টিস্টোরিড বিল্ডিঙের বাসাগুলোকে বুঝায়।
** বেসমেন্ট হলো বাসাবাড়ির নিচতলা।
.
বাচ্চাদের স্কুল
==========
খুব সম্ভব আপনার বাসার আশেপাশেই স্কুল পেয়ে যাবেন। কর্তৃপক্ষ আপনার বাচ্চাকে বয়স অনুযায়ী ক্লাস/গ্রেডে ভর্তি করে নেবে। দুশ্চিন্তা করবেন না। তবে বাংলাদেশ থেকে আসার আগে ডাক্তারের কাছ থেকে বাচ্চার যাবতীয় ভ্যাকসিন/টিকার রেকর্ড সাথে নিয়ে আসবেন।

ট্রান্সপোর্ট
========
কানাডার অধিকাংশ বড় শহরগুলোয় পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ভালো মানের। প্রাথমিকভাবে আপনার ব্যক্তিগত গাড়ির প্রয়োজন হবে না। বাসে করেই শহরের যেকোনো জায়গায় যাবেন অনায়াসে। তবে শহর ভেদে সুবিধা কমবেশি থাকবে। তবে কান্ট্রি সাইডে/গ্রামের দিকে থাকতে হলে গাড়ি দরকার I এখানে কাউকে ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে আগ্রহ ভরে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে। পরিচিত কারো কাছ থেকে জেনে নিন/গুগল করুন কিভাবে যাবেন।

SIN, হেলথ কার্ড, PR কার্ড, ব্যাঙ্ক একাউন্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স
============================================

আপনাকে SIN [Social Insurance number] নিতে হবে। এটা ৯ ডিজিটের একটা নাম্বার। চাকরি পাওয়া, সরকারি/বেসরকারি অনেক ধরণের কর্মকান্ডে এটা প্রয়োজন। যোগাযোগ: গুগল করুন Service Canada অফিস, প্রয়োজনে ফোন করুন। আপনাকে স্বশরীরে উপস্থিত হতে হবে।
হেলথ কার্ড/চিকিৎসা
…………………………..
এদেশে ডাক্তার দেখাতে হলে হেলথ কার্ড থাকতে হবে। তা না হলে আপনাকে টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখাতে হবে। হেলথ কার্ড পেতে প্রায় তিন মাস সময় লাগতে পারে [শহরভেদে কম বেশি হবে]। এদেশে অধিকাংশ চিকিৎসা ফ্রি [চোখ আর দাঁত-এর ব্যাপারে রেস্ট্রিকশন আছে ] যোগাযোগ প্রভিন্সিয়াল অফিস: যেমন- Service Ontario office [অন্টারিও প্রভিন্সের জন্য]. আপনাকে ওখানে গিয়ে এপলাই করতে হবে। হেলথ কার্ড পাবার পর পারিবারিক ডাক্তার খুঁজে নিন বাসার আশেপাশে। প্রাথমিকভাবে ওখানেই ডাক্তার দেখাতে হবে। তবে ইচ্ছা করলে আপনি হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে গিয়েও চিকিসা নিতে পারেন। রেস্ট্রিকশন নেই।

PR [পার্মানেন্ট রেসিডেন্স] কার্ড
…………………………………………
যোগাযোগ Service Canada Office. এখানেও প্রায় ২-৩ মাস সময় লাগতে পারে। প্রভিন্স হিসাবে ভিন্নতা আছে। আপনি কানাডায় ল্যান্ড করার পর এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন অফিসে যে বাসার এড্রেস দেবেন, সেই ঠিকানায় কার্ড পাঠানো হবে। তবে এড্রেস পরিবর্তন করলে অবস্যই দ্রুত জানাবেন অফিসে।
.
ব্যাংক একাউন্ট
…………………..
.
আপনার পছন্দমাফিক যেকোনো ব্যাঙ্ক-এ গিয়ে উপস্থিত হউন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে। এটা খুবই জরুরি। TD, RBC, CIBC, BMO, SCOTIA ইত্যাদি যেকোনো ব্যাংকএ গেলে তারা আপনাকে সহায়তা দিয়ে আগ্রহভরে একাউন্ট খুলে দেবে। নিউকামারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে।
.
ড্রাইভিং লাইসেন্স
……………………….
.
দেরি না করে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর প্রসেসিং শুরু করে দিন। উদাহরণস্বরূপ-যোগাযোগ: SERVICE ONTARIO . আপনি গাড়ি কিনুন বা না কিনুন, এটা একটা অপরিহার্য V.I.আইডি। আপনাকে গাড়ি চালাতে পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্স নিতে মোট তিনটা পরীক্ষা দিতে হবে [এখানে অন্টারিও প্রভিনসেরটা বলা হলো। প্রভিন্স ভেদে ভিন্ন হবে] :
.
১. জি-১ [লিখিত পরীক্ষা। টিক মার্ক]
.
২. জি-২ [জি-১ পাশ করার এক বছর পরে এই পরীক্ষা দিতে পারবেন। আপনাকে প্রেক্টিক্যালি ড্রাইভ করে পরীক্ষা দিতে হবে; এক্সামিনারকে সাথে নিয়ে। উনি মার্কিং করবেন। এই অংশে কোনো লিখিত পরীক্ষা নাই।
.
৩. জি (পূর্ণাঙ্গ) [ জি-২ পরীক্ষায় পাশ করার পর এই “জি” ড্রাইভিং পরীক্ষা দিতে হবে। এখানেও আপনি গাড়ি চালাবেন এক্সামিনারকে সাথে নিয়ে, অনেকটা জি-২ পরীক্ষার মতো, তবে আরও বড়/জটিল রাস্তায়। আরও প্রফেশনালভাবে চালাতে হবে]

*** জি-২ পাশ করার পর আপনি গাড়ি চালাতে পারবেন, সামান্য কিছু রেস্ট্রিকশন ছাড়া। তবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনাকে অবশ্যই জি লাইসেন্স নিতে হবে।
.
.
ফার্নিচার
========
.
প্রাথমিকভাবে আপনি ফার্নিচার ব্যাঙ্ক থেকে শর্তসাপেক্ষে প্রায় বিনামূল্যে ফার্নিচার নিয়ে আসতে পারেন। [এই সুবিধা সব শহরে নাও থাকতে পারে] পরিবার হিসাবে একটা লিমিট দেওয়া থাকে। তবে ট্রাক ভাড়া আপনাকে দিতে হবে। সমাজকর্মীর সহায়তা নিন। তাড়াহুড়া করবেন না, ধীরে সুস্থে কিনতে থাকুন পরবর্তীতে। তবে পুরাণ ম্যাট্রেস /বক্স ঘরে তোলার আগে চেক করে নিন ছাড়পোকা /তেলাপোকা আছে কি না।
.
জামা-কাপড়
==========
.
ওয়ালমার্ট, ওল্ড নেভি, গাপস, উইনার্স, অশ-খশ ইত্যাদি বিভিন্ন দোকান থেকে নতুন জামাকাপড় কিনতে পারেন। আর পুরানা/ব্যবহৃত জামাকাপড় কিনতে পারেন থ্রিফট (THRIFT) স্টোর থেকে। সেখানে বেশ কম দামে ভালো জিনিষও মেলে। গুগল এ থ্রিফট ষ্টোর লিখে সার্চ দিয়ে এড্রেস জেনে নিন।
.
সোশ্যাল সার্ভিস/ অ্যাসিস্ট্যান্স
=======================
.
আপনি যদি নিতান্তই আপনার আর্থিক ব্যয় মিটাতে অক্ষম হন, তাহলে সমাজকর্মীকে খোলাখুলি বলুন। সবই কনফিডেন্সিয়াল/গোপনীয়। আপনি নিজেও গুগল-এ Social Assistance Canada সার্চ দিয়ে তথ্য নিতে পারেন। প্রভিন্স ভেদে নামের ভিন্নতা আছে। সরকার থেকে একটা সহায়তা পেতে পারেন, যদি তা পাবার যোগ্য হন। ভয় নেই, কানাডায় কেউ না খেয়ে থাকে না।

যত দ্রুত পারা যায় চাইল্ড বেনিফিট এর জন্য এপলাই করে ফেলবেন।
.

চাকরি/পড়াশোনা
==============
.
EMPLOYMENT সেন্টারগুলোতে যোগাযোগ করুন। সেখানে বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার, টেলিফোন, প্রিন্ট, ফ্যাক্স পেতে পারেন। তারা প্রাথমিকভাবে চাকরি পাবার একটা পথ বাতলিয়ে দিতে সহায়তা করবে। পড়াশোনার ব্যাপারেও সহায়পতা করবে। আর আপনার সিভি/রেজিউমি বানাতেও অনেক সহায়তা করবে। মনে রাখবেন কানাডার সিভি/রেজিউমি বাংলাদেশের থেকে সম্পূর্ণই আলাদা। তাই ভালোমতো কানাডিয়ান চাহিদা মোতাবেক ঠিক-ঠাক না করে কোথাও এপলাই করে লাভ নেই। তবে সারভাইভাল জব পেতে চাইলে সরাসরি সেই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সিভি দিয়ে আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে সিভি নাও লাগতে পারে, শুধু ফর্ম ফিলাপ লাগতে পারে।
.
পড়াশোনা করার জন্য কানাডা স্বর্গ। আর কানাডিয়ান ডিগ্রি মানেই ভালো চাকরির সম্ভাবনা। জীবন গড়ে তুলবার জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ভালো জব পাবার সব ব্যবস্থা করে রেখেছে সরকার। আপনি সেভাবে এগুলে সফল হবেন তাতে কোনো সন্দেহ নাই। অনেকেই তড়িঘড়ি করে সারভাইভাল জবে ঢুকে আর বেরুতে পারে না। মনে রাখবেন সারভাইভাল জব মানেই সেটা বছরের পর বছর কন্টিনিউ করা নয়।
.
.
খুবই গুরুত্বপূর্ণ
++++++++++++
.
*** অপরিচিত কাউকে ব্যক্তিগত তথ্য দেবেন না

*** জন্মতারিখ, পোস্টাল কোড, ফোন নম্বর অপরিচিত মানুষের কাছে শেয়ার করবেন না

*** দুষ্টু লোক ফোন করে কৌশলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়ে বিপদে ফেলতে পারে

*** আপনি নিজে ফোন করে বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে তথ্য দিতে পারেন, কিন্তু কেউ কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম করে আপনাকে ফোন করলে নিশ্চিত না হয়ে কোনো তথ্য দেবেন না

*** কানাডায় আপনার নিজস্ব একটা ঠিকানা খুবই জরুরি

*** মনে রাখবেন ভয়ভীতি দেখিয়ে ফোন করে টাকা চাওয়া মানেই “ফ্রড কল”

আর সুন্দর এই দেশটা ঘুরে দেখুন, উপভোগ করুন I পজিটিভ হউন। দেশে ফেলে আসা আপন মানুষগুলোও যেন বঞ্চিত না হয় আপনার অভিজ্ঞতা, সংস্পর্শ, সহায়তা থেকে। সবাইকে নিয়েই সার্থক হোক আপনার পথ চলা।

Courtesy: Zaved Iqbal

Source : https://www.facebook.com/zavedi1/posts/10157077262272860

পর্ব ০৬ঃ কানাডা ইমিগ্রেশন প্রস্তুতির আদ্যপান্ত?

কিছু দিন আগে পরিচিত এক ভাই ফেসবুকে ইনবক্স করেছেনে। উনার ভাষ্য হলো কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার আর স্থানীয় সরকার যে সকল পেশার জন্য স্কিল ওয়ার্কার খুঁজছে তা উনার সাথে কোনটাই পুরোপুরি মিলছে না! গুটি কয়েক পেশা ইনিয়ে বিনিয়ে মেলানো যায় তবে সেটাও খুব সহজ নয়।

ভাই, মুশকিল আহসানের দাওয়া চাইলেন!

মুহতারামে হাজিরিন, কেন্দ্রীয় (ফেডারেল) বা স্থানীয় (প্রভিন্সিয়াল) সরকার আপনার পেশার সাথে তাদের অফার করা পেশা মিলে কিনা তা পুঙ্খানুপুঙ্খও ভাবে খুঁটিয়ে দেখবে। জেনে রাখুন, গড়ে কুঁড়ি শতাংশ আবেদন শুধু মাত্র এনওসি (ন্যাশনাল অকুপেশন ক্লাসিফিকেশন) মিস ম্যাচের কারণে বাতিল হয়ে যায়!

তাহলে?

ইমিগ্রেশন এই ধাপ অত্যন্ত জটিল, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ! বাংলাদেশের বেশীরভাগ পেশাজীবি এনওসি মিলাতে হিমশিম খেয়ে থাকেন। পরিচিত অনেক বন্ধু বান্ধবকে চিনি যারা এই ধাপের প্যারা সহ্য করতে না পেরে কানাডা মাইগ্রেশনের ইচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছে।

সে না হয় বুঝলাম, কিন্তু মুশকিল আহসান কেমনে হবে ভ্রাতা?

হুম, আসেন প্রেক্ষাপট আগে বুঝার চেষ্টা করি। ধরা যাক আপনি একজন ব্যাংকার, কাজ শুরু করেছেন ক্যাশিয়ার হিসাবে, প্রমোশন পেয়ে ব্রাঞ্চ ব্যাংকিং এর আদ্দ্যপাদ্য নিয়ে কাজ করেছেন আরো কিছু দিন। আপনার পারফারমেন্সের কারণে অফিস আপনাকে প্রমোশন দিয়ে ক্রেডিট কার্ড ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব দিলো। আপনি তুখোর পেলেয়ার, ক্রেডিট কার্ড সেল করে তামা তামা করে ফেলসেন, বস মেলা খুশি আর আপনাকে প্রমোশন দিয়ে অডিট ডিপার্টমেন্টে পাঠাই দিলো। ভালো কথা, জীবনের এই মুহুর্তে এসে আপনার মনে হলো বেশতো দেখলাম, এবার নিজের পরিচিত গণ্ডির বাইরে চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেখা যাক। সিদ্ধান্ত নিলেন আপনি কানাডায় পাড়ি জমাবেন। কিন্তু কোনো ভাবেই এনওসি মেলাতে পারছেন।

কিন্তু গড়বড়টা কোথায় ভাগনে?

মুহতারামে হাজিরিন, আমাদের দেশে ভার্সাটাইল এক্সপেরিইয়েন্সের বড়ই ডিমান্ড। কিন্তু এক মুল্লুকে ওরা স্পেশালিস্ট চায়। ধরুন সেলস মানে সেলস, অডিটর মানে অডিটর, ডাক্তার মানে ডাক্তার, নো হাঙ্কি পাঙ্কি!

আপনার হয়ত ১০ বছরের অভিগ্যতা আছে ব্যংকিং লাইনে। কিন্তু উস্তাদরা খুঁজছে এমন একজন যার ইনভেস্টমেন্ট অভিগ্যতা আছে! ১০ বছরের মধ্যে আপনি ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে কাজ করেছেন মাত্র ৩ বছর তাই কাগজে কলমে আপনি শুধু ৩ বছরের পয়েন্টই পাবেন! আর বেশীরভাগ এপ্লিকেশন বাতিল হবার তা অন্যতম কারণ।

উহু, পরিত্রাণ!

সমাধান আছে বৈকি! কি খাওয়াবেন বলেন :p

আমি খুব সহজ একটা কেস স্টাডি দিচ্ছি। নিজ দায়িত্বে নিজ নিজ প্রফেশনের সাথে মিলিয়ে নিবেন। ধরুন, আপনি সেলস ডিসিপ্লিনে এপ্লাই করবেন। আমার দশ বছরের মধ্যে প্রথম ৩ বছর আপনি কাজ করেছেন কল সেন্টারে, পরবর্তি ৪ বছর প্রোডাক্ট ম্যানেজার আর শেষের ৩ বছর পিওর ব্যাংকিং সেলস! এবার আপনাকে প্রথম ৭ বছরের অভিগ্যতা এমন ভাবে সাজাতে হবে যাতে তা সেলসের সাথে সামঞ্জ্যষ্যপূর্ণ হয়।

কিন্তু কিভাবে?

মুহতারামে হাজিরিন, আর যাই করেন মিছা কতা কইয়েন না। আমি উপায় বাতলে দিচ্ছি, শুধু নিজ দায়িত্বে গুছিয়ে নিবেন। আপনি প্রথম তিন বছর কাজ করেছেন কল সেন্টারে, ভালো কথা। কিন্তু এই অভিগ্যতাকে আপনাকে টেনে টুনে সেলসের দিকে নিয়ে যেতে হবে। যেমন আপনি বলতে পারেন আপনি কাস্টমারের অভিযোগ সমাধান করার পাশাপাশি আপ সেল করেছেন। কাস্টমারকে ভুজুং ভাজুং দিয়ে ক্রেডিট কার্ড সেল করেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রোমোশনাল অফার, পেইড সার্ভিস কাস্টমারকে গছিয়ে দিয়েছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। যেহেতু আপনি সেলস ডিসিপ্লিনে এপ্লাই করবেন তাই কানাডার অফিসিয়াল এনওসি পোর্টাল থেকে দেখে নিবেন সেলসে কি ধরনের জব ডেসক্রিপশন ওয়লা লোক খুঁজছে। লাইন বাই লাইন পরে এবার আপনি আপনার অভিগ্যতা তার সাথে ম্যাপ করবেন যেভাবে কল সেন্টারের অভিগ্যতা একটু আগেই সেলসের মত করে আমরা লিখতে শিখলাম। পরবর্তি তিন বছর কাজ করেছেন প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসাবে? কুল, আপনি বড় বড় কর্পোরেটদের জন্য কাস্টমাইজড প্রোডাক্ট (ধরুন ক্রেডিট কার্ড) ডিজাইন করেছেন। আদতে এটাতো সেলসের জন্যই করা রাইট? প্রোডাক্ট ডিজানের সেলস পার্টটুকু শুধু হাইলাইট করবেন। এভাবে আপনার বেলাইনের অভিগ্যতা লাইনে আনতে হবে। অধৈর্য্য হয়েছেন তো মরসেন, স্পেন্ড ইনাফ টাইম টু মেইক ইওর এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট। ইট উইল পেইড অফ ইভেনচুয়লি!

ভালো কথা সে না হয় করলাম? কিন্তু ভাউ কানাডা যাইতা কত টাকা লাগে?

হুম, সেটাও এক বড় জটিলতা। কানাডায় এপ্লাই করতে হলে আপনার ফ্যামিলির সাইজের উপর ভিত্তি করে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আপনার বা আপনার স্ত্রীর অথবা জয়েন্ট একাউন্টে নুন্যতম তিন মাস থাকতে হবে। এক দিন কম হলেও ইমিগ্রেশন তা এলাও করেনা। রিসাইকেলবিনে আপনার এপ্লিকেশন চলে যাবে।

ভাই, দুঃখের কতা আর কি কমু 😦 শেয়ার বাজারে লগ্নি করে আমি এখন নিঃস্ব!

হুম, আসেন চিপা বুদ্ধি শিখাই দেই।

ক্যাশ টাকা যা ম্যানেজ করতে পারেন ভালো। আপনি চাইলে আপনার অফিসে যে প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রেচুইটি জমা হচ্ছে সেই টাকাও দেখাতে পারবেন! মানে আপনি চাকরি ছেড়ে দিলে তো সেই টাকা আপনি পাচ্ছেনই! সঞ্চয় পত্রও দেখাতে পারবেন। সোনা গয়না যা আছে সেটার মূল্য দেখাতে পারবেন না।

ওহ আরো একটা উপায় আছে :p , আগেই ডিসক্লেইমার দিয়ে দেই যৌতুক নেয়া ও দেয়া সমান অপরাধ!

ইয়ে মানে আমি কিছু মানুষের কেস স্টাডি শেয়ার করতে পারি। আমি অনেককে চিনি যাদের শ্বশুর শাশুড়ি এ ক্ষেত্রে সহযোগীতা করতে এগিয়ে এসেছেন। ধরুন আপনার লাখ পাঁচেক টাকা শর্ট আছে, আপনার শ্বশুর তার মেয়েকে (আপনার বউ) পাঁচ লাখ টাকা গিফট করতে চাচ্ছে। যথাযত নিয়ম মেনে একটা গিফট ডিড করে টাকা আপনার বউ এর একাউন্টে চলে আসলে সেই টাকাও দেখাতে পারবেন! তবে আপনার শুশুর আব্বার ব্যাংক একাউন্টের ডিটেইল প্লাস ট্যাক্স রিটার্নের কপি চাহিবা মাত্রি দিতে বাধ্য থাকিতে হইবে!

আর যদি লোন নিয়ে দেখাই?

কবি নিরব ভাউ, ইহা অনৈতিক! আর কিছু বলতে পারবো না, নিজ দায়িত্বে বুঝে নেন!

আর যদি নীলক্ষেত থেকে চাকুরীর লেটার কিংবা ব্যংকের স্টেটমেন্ট বানাই নেই?

হুর মিয়া, দুই নাম্বারি কিছু করবেন না, আল্লাহর দোহাই লাগে।

আমি কয়েকজনকে চিনি যারা নিজের কাজের অভিগ্যতা না দেখিয়ে ম্যানেজ করে শ্বশুর বা আত্নীইয়ের অফিস থেকে এক্সপেরিয়েন্স লেটার ম্যানেজ করে দিব্বি কানাডা চলে আসছে। কিন্তু আমি এমন কিছু মানুষকে চিনি যারা এই আকাম করতে গিয়া ১০ বছরের জন্য কানাডায় ব্যান হয়ে গিয়েছে! আর একবার ইমিগ্রেশন ফ্রডে ধরা পরলে উন্নত বিশ্ব আপনার জন্য ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাবে! বড় বড় কর্পোরেট অফিসের ক্ষেত্রে রেন্ডমলি সিকিউরিটি চেক হলেও ছোট অর্গানাইজেশনের জন্য হরহামেশাই সিকিউরিটি চেক হয়।

ধুর মিয়া ওরা কি বাংলাদেশে আইসা চেক করবো? কানাডা থেকে বাংলাদেশে আসার পেলেনের ভাড়া যানেন?

মুহতারামে হাজিরিন, বাংলাদেশে সিকিউরিটি চেকের জন্য লোকাল এজেন্ট আছে। ওরাই আপনার অফিসে এসে বা ফোনে কথা বলে বা যেমনে পারে তেমনে আপনার চৌদ্দগুষ্টির খবর বের করবে।

অতি চালাকের গলায় দড়ি?

উস্তাদ যারা চালাকি করে পার হয়ে গেসে?

মিয়া ভাই, এরাও রেহাই পাবে না। কথায় আছে না, পাপ কখনো বাপরে ছাড়ে না! কানাডা আইসা চাকরী করতে হবে না? সারভাইভিং জব যেমন ধরুন ওয়ালমার্ট, ম্যাক ডোনাল্ড বা কেএফসিতে চাকুরী করবেন? আপনার সিকিউরিটি চেক কমপ্লিট না হলে আপনি জয়েন করতে পারবেন না। কানাডার দারোয়ানের চাকুরী করতে হলেও কোম্পানী আপনার সিকিউরিটি চেক করবে।
আর যদি মূল ধারার অফিসে আপনার চাকুরী হয় তবে এক্সটেন্সিভ সিকিউরিটি চেক হবে। যেমন বাংলাদেশে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে তালাশ লাগাবে আপনার সার্টিফিকেট আসল না জাল, কাজের অভিগ্যতা আসল নাকি ফেক, আপনার পূর্বের সকল এমপ্লয়ারেরে সাথে যোগাযোগ করবে, বাংলদেশের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ওরা করবে। শুধু কি তাই? আপনি যদি নূন্যতম ৬ মাস বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশে একটানা থাকেন তাহলে সেই দেশের পুলিশ ক্লিয়ারেন্সও ওরা করাবে। গড়ে এক মাস লাগলেও ক্ষেত্র বিশেষে তিন মাসও লাগতে পারে। আর যদি ব্যাংকের মতো সেন্সেটিভ ইন্ডাস্ট্রি হয় তাইলে এতো এতো চেক হবে যে আপনার এরেঞ্জ ম্যারেজেও আমি শিওর ভাবিদের পক্ষ থেকে এতো চেক করে নাই।

আর হ্যাঁ! কানাডা মানেই চক চকে ঝক ঝকে না! দূর থেকে দেখলে নদীর ওপার সবসময়ই সুন্দর মনে হয়। দেশে থাকতে মাঝে মধ্যেই পত্রিকায় পরতাম ডাক্তার নাকি পেটে কাঁচি রেখেই রোগীর পেট সেলাই করে দিসে!

চিন্তা করেন কতবড় হতচ্ছাড়া ডাক্তার?

মুহতারামে হাজিরিন, কিছুদিন আগে কানাডার মন্ট্রিয়ালের এক ডাক্তার সেইম কাজ করেছে। ক্যান্সারের রোগী, হালারপুত অপারেশন করে ৩৩ ইঞ্চি মেটাল প্লেট পেটের ভিতরে রেখে সেলাই করে দিসে।

লিংকঃ http://www.cbc.ca/news/canada/montreal/montreal-hospital-instrument-left-inside-patient-sylvie-dube-1.4181278

কানাডা অবশ্যই অপরচুনিটির দেশ কিন্তু বেহেশত না!

জয় বাংলা!

(আমার নিজের কোনো ভিসা প্রসেসিং এজেন্সি নাই, আমি কোনো ভিসা প্রসেসিং এজেন্সির সাথে জড়িত না, দয়া করে এই ধরনের প্রশ্ন ইনবক্সে করে বিব্রত করবেন না, আমার লেখা ওপেন সোর্স, সাধারণের উপকারের জন্য নিজের সময় ব্যয় করে লেখা, আপনাদের ইমিগ্রেশন যাত্রা শুভ হোক, আজকের জন্য ওভার এন্ড আউট)

Courtesy:

Akhlaqur Rahman Rahi

পর্ব ০৪ঃ কানাডার লাইফ স্টাইল আর খরচাপাতি?

কানাডার আবহাওয়া মূলত ঠান্ডা হলেও কিছু কিছু প্রভিন্সে গ্রীষ্মকালে অসহনীয় গরম পরে। পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যাবে ১৯৩৭ সালে সাস্কাচুয়ানে গ্রীষ্মকালে গরম ৪৫ ডিগ্রিতে গিয়ে ঠেকেছিলো। ভ্যাঙ্কুভার ছাড়া প্রায় সকল প্রভিন্সেই শীতকাল বেশ রয়েসয়ে কাটাতে হয়। গড় তাপমাত্রা -১৫ থেকে -২০ এর মধ্যেই থাকে। আমাদের দেশে যেমন সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস, হিট ওয়েভ কিংবা শৈত্য প্রবাহ জনজীবন দূর্বিসহ করে তুলে তেমনি এই মুল্লুকে স্নো স্ট্রোম বা তুষার ঝড় শীতকালে নিয়মিতই নিত্যনৈমিত্তিক কাজে ব্যঘাত ঘটায়। ১৯৪৭ সালে ইউকন টেরিটরিতে একবার তাপমাত্রা মাইনাস ৬৩ (-৬৩) ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যায়। অনেক বড় প্রভিন্সের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা -৪০ থেকে -৫০ এর ঘরে নেমে যাওয়ার নজির আছে। তবে এই এক্সট্রিম আবহাওয়া বেশী দিন স্থায়ী হয় না কিন্তু গড়ে অনেকে প্রভিন্সেই হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রা বহাত তবিয়তে চার থেকে পাঁচ মাস বজায় থাকে।

তাহলে কানাডা কি আসলে বসবাস যোগ্য?

অবশ্যই বসবাস যোগ্য! এই ঠান্ডা কিন্তু হঠ্যৎ করে আসেনি। উত্তরের আবহাওয়া বরারবরই এমন আর তার সাথে মানিয়ে চলার জন্য আপনাকে প্রপার জামা কাপড় পড়ে রাস্তায় বের হতে হবে। কানাডার বেশীরভাগ প্রভিন্সের বড় শহরের ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম অত্যন্ত চমৎকার! বাস, মেট্রো রেল কিংবা সি-বাস প্রতিটি পাবলিক ট্রান্সপোর্টের মধ্যেই হিটিং সিস্টেম বাধ্যতামূলক। গুগল ম্যাপ বা সিটির বিশেষায়িতই মোবাইল এপ্লিকেশন দিয়ে আপনি লাইভ বাস মনিটর করতে পারবেন। বাস স্টপে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার দিন শেষ। মুঠোফোনে বাসের গতিবিধি এবং আবার বাস স্টপে বাস পৌছানোর সময় দেখে আপনি সহজেই সময়ক্ষেপণ ছাড়াই বাসে চড়তে পারবে।

বুঝলাম কিন্তু টিকিট?

হুম, পাবলিক ট্রান্সপোর্টের টিকেটিং ব্যবস্থাও অত্যন্ত চমৎকার! আপনার হাতে সাকুল্যে ২টা অপশন থাকবে। অপশন ১ঃ বাসে উঠে নির্ধারিত কয়েন বক্সে একে এক কয়েন ড্রপ করতে থাকবেন আর যখনি কয়েন দিয়ে টিকেটের মূল্য পরিশোধ হয়ে যাবে ড্রাইভারের পাশের টিকেটিং সিস্টেমে সবুজ বাতি জ্বলে উঠবে। এখানে ভাংতির কোনো সিস্টেম নাই, ড্রাইভারের কাছে কানাকড়িও থাকে না আর হেল্পার থাকার কথাও ভাবাও যায় না! টিকেটের সম পরিমাণ কয়েন আপনাকেই ব্যবস্থা করতে হবে। ধরুন টিকেটে মূল্য ৩ ডলার ২৫ সেন্ট কিন্তু আপনার কাছে আছে ২ ডলারের ২টা কয়েন মানে ৪ ডলার। হিসাবে আপনার ৭৫ পয়সা ফিরত পাবার কথা, কিন্তু ক্যাশলেস সিস্টেমের কারণে আপনার অতিরিক্ত পঁচাত্তর পয়সা ফিরত পাবেন না। আবার ধরুণ আপনি বিপদে পরেছেন, মানিব্যাগের সকল গোপন কুঠুরি হাতরে ৩ ডলার পেয়েছেন, অর্থ্যাৎ আপনার এখনো ২৫ পয়সা ঘাটতি! বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আপনি ড্রাইভারকে অনুরোধ করলে সে আপনাকে বাকি টাকা ওয়েভ (মাফ) করে দিবে।

ইয়া মাবুদ, কয়েনের ব্যবস্থা করতে গিয়ে কি আবার মাটির ব্যাংকের প্রথা ফিরায়ে আনতে হবে?

মুহতারামে হাজিরিন, এখানের যারা বাসে চলাচল করেন তাদের ৯০ ভাগ মাসিক বাস পাস করে থাকেন। নির্ধারিত মূল্যের বিনিময়ে আপনি মাসিক পাস কিনতে পারবেন আর বাসে উঠার সময় নির্ধারিত স্থানে কার্ড পাঞ্চ করে দিব্বি যাতায়ত করতে পারবেন। মাসিক বাস পাসের ক্ষেত্রে আপনি যতখুশি তত বার উঠানামা করতে পারবেন, আনলিমিটেড এক্সেস! তবে এর জন্য আপনাকে গড়ে ১০০ ডলার গুনতে হবে। প্রভিন্স ভেদে এই রেট আবার উঠা নামা করে। ভালো খবর হলো এই মূল্যের উপর আপনাকে ট্যাক্স প্রদাণ করতে হবে না আর এই মাসিক কার্ড দিয়ে শুধু বাস না বরং আপনি বাস, রেল এমন কি সি-বাস (বাংলাদেশের ফেরীর মত) পর্যন্ত সার্ভিস উপভোগ করতে পারবেন।

কিন্তু আমি যদি গাড়ী কিনি?

অবশ্যই, এখানে গাড়ি খুবই মামুলি ব্যাপার। এমন অনেক স্টোর দেখবেন যেখানে ক্যাশিয়ার ২০১৭ ল্যাটেস্ট মডেলের ফোর্ড চালায় তো দোকানের মালিক মারুতি চালাচ্ছে! আপনি পার্ট টাইম চাকুরীতে জয়েন করলেই লোনে গাড়ী কিনতে পারবেন। বাংলাদেশের মত এখানে আকাশ ছোঁয়া ইন্টারেস্ট না, ইন্টারেস্ট বেশ সহনীয়। আপনি চাইলে কিছু টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে শোরুম থেকে গাড়ী কিনতে পারবেন বাকি টাকা মাসে/সপ্তাহে নির্দিষ্ট ইন্সটলমেন্ট ৪/৫ বছরে পরিশোধ করতে পারবেন।

বুঝলাম কিন্তু লাইসেন্স?

উঁহু, সে এক বিশাল কাহিনী। গাড়ী আপনি যখন খুশি কিনতে পারলেও লাইসেন্সের ব্যাপারে কর্তপক্ষ অত্যন্ত কঠোর। ধরে নিলাম বাংলাদেশে আপনার লাইসেন্স ছিলো না, এখানে এসে প্রথমেই আপনাকে ট্রাফিক রুলস নিয়ে পড়াশোনা করে কম্পিউটার টেস্টে পাস (মূলত মাল্টিপল চয়েস) করে লার্নাস নিতে হবে। লার্নাস পাবার পর আপনি চালানো শিখবেন কিন্তু যখনি গাড়ী নিয়ে রাস্তায় বের হবেন তখন আপনার পাশে অবশ্যই, আই রিপিট অবশ্যই ফুল ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে এমন কেউ থাকতে হবে যে আপনাকে গাইড করবে। কোনো অবস্থাতেই লারনাস নিয়ে একা বের হওয়া যাবে না। আর যদি একা বের হয়ে ধরা খেয়ে যান তাহলে আপনি শেষ, প্রভিন্সের আইন অনুযায়ী মোটা অংকের জরিমানা এবং নেগেটিভ টিকিট আপনাকে ধরিয়ে দেয়া হবে যা কিনা আপনার ইন্সুরেন্সে প্রভাব ফেলবে। প্রভিন্স ভেদে ৯ থেকে ১২ মাস লার্নাস হিসাবে চালানো, নির্ধারিত সেন্টার থেকে ত্বাত্তিক এবং ব্যবহারিক প্রশিক্ষন নিয়ে তবেই মূল লাইসেন্সের জন্য আপনি ড্রাইভ টেস্ট দিতে পারবেন। ড্রাইভ টেস্টে পাস করলে আপনাকে ফুল লাইসেন্স দেয়া হবে তবে প্রথমেই এর সাথে নবিস টাইটেল যুক্ত থাকবে। আরো বেশ কিছুদিন এভাবে চালোনোর পর নির্ধারিত সময়ে আপনি ফুল লাইসেন্স পাবেন। লার্নাস থেকে ফুল লাইসেন্স পেতে গড়পড়তা ১৫-১৮ মাস লেগে যায় তবে তা প্রভিন্স ভেদে ভিন্ন হতে পারে।

কিন্তু আমি তো বাংলাদেশে তুখোর ড্রাইভার ছিলাম ভাউ!

ইয়ে মানে বাংলাদেশে কবে আইন মেনে গাড়ী চালিয়েছেন? বাংলাদেশের শতকরা শতভাগ ট্রাফিক লাইটা আসলে ঘোড়ার ডিম। খুবই দুঃখজনক তবে সত্যি। তবে, আপনার যদি বাংলাদেশে গাড়ী চালানোর অভিগ্যতা থাকে তাহলে আপনার লাইসেন্সের বয়সের উপর ভিত্তি করে অথরিটি আপনাকে ওয়েটিং টাইম ওয়েভ করে দিতে পারে। সাধারণত এক বছর চালানোর অভিগ্যতা থাকলে আপনি কম্পিউটার টেস্ট দিয়ে সাথে সাথে ড্রাইভ টেস্ট দিতে পারবেন।

আমার তো ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই, কিন্তু নীলক্ষেত আছে না উস্তাদ 😉 ?

মুহতারামে হাজিরিন, একটা সময় ছিলো বাংলাদেশের সবকিছুই এনালগ ছিলো। অনেক আদম নীলক্ষেত থেকে লাইসেন্স নিয়ে এসে সেটার উপর ভিত্তি করেই পার পেয়ে গেছেন। এখন আর সেই দিন নাই, এখন লাইসেন্সে চিপ বসেছে। আর এখানকার অথরিটি লাইসেন্স অনেক ক্ষেত্রেই বিআরটিএ বা লোকাল বাংলাদেশ এম্বেসীর সাথে কথা বলে আপনার লাইসেন্স ভেরিফাই করে নেয়। জাল লাইসেন্স নিয়ে ধরা খেয়েছেন তো আপনি শেষ। গত পরশুই আমার পরিচিত দুই ভাই নীলক্ষেতের জাল লাইসেন্স নিয়ে ধরা খেয়েছেন। তারা যে হেনেস্তার স্বীকার হয়েছেন তা আর নাই বা বললাম। উপরন্তু আমরা বাংলাদেশীরা চোর হিসাবে ট্যাগড হয়েছি। এখন আসল লাইসেন্স নিয়ে আসলে আপনার দিকে যেভাবে তাকাবে তা মোটেও শোভনীয় নয় আর তার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী।

এই দেশে অনেক চাকুরীর সার্কুলারে স্পষ্ট লেখা থাকে ফুল ড্রাইভিং লাইসেন্স আবশ্যক। আপনার ফুল ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে আপনি এপ্লাই পর্যন্ত করতে পারবেন না। এখানে শীতকাল বেশ লম্বা হয়, বরফ পরলেও আপনি যাতে সঠিক সময়ে অফিসে পৌছাতে পারেন অনেক রিক্রুইটার এটা নিশ্চিত করতে চায়। এর পাশাপাশি যে সকল চাকুরীতে সাইট ভিসিটের ব্যাপার থাকে সেখানে সব জায়গাতেই আপনাকে নিজের গাড়ী নিয়ে যেতে হবে। অফিসের গাড়ী বলে কোনো কনসেপ্ট নেই, অফিস আপনাকে হয়ত তেলের খরচ বহন করবে অনেক ক্ষেত্রে কিন্তু গাড়ীটা আপনারই হতে হবে আর সাথে ড্রাইভিং লাইসেন্সটাও!

এখানে গাড়ী চালানোর ১২ আনাই রুলস। তার উপর গাড়ী চলে রাস্তার ডান দিকে যা বাংলাদেশের সম্পূর্ণ বিপরীত! অনেক ঝানু ড্রাইভারও এখানে এসে ৩/৪ ঘণ্টা লেসন নিয়ে থাকেন এই পরিবর্তনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার জন্য। মনে রাখতে হবে অভার কনফিডেন্স ইজ এ কিলার।

ইলিয়াস কাঞ্চনের কথা সব সময় মাথায় রাখবেন, “একটি দূর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না”।

বাংলাদেশের বেশীরভাগ গাড়ীর মালিক থার্ড পার্টি ইনস্যুরেন্স করে থাকেন যা পাওয়া যায় নাম মাত্র মূল্যে কিন্তু এই মুল্লুকে আপনাকে বেশ বড় অংকের টাকা মাসিক ব্যয় করতে হবে। গড় পড়তা ১০০-৩৫০ পর্যন্ত মাসিক প্রদান করতে হতে পারে। প্রভিন্স, আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের বয়স, গাড়ীর বয়স ইত্যারি প্যারামিটারের উপর ভিত্তি করে ইন্সুরেন্স উঠা নামা করে। উদাহরণ দেয়া যাক, টরেন্টোতে গড়ে ৩০০ ডলার আপনাকে মাসিক গুণতে হবে গাড়ীর ইন্স্যুরেন্সের পিছনে। আর ইন্স্যুরেন্স ছাড়া গাড়ী রাস্তার বের করতে পারবেন না।!

হুম বুঝলাম, ভালো কথা এবার বাসাবাড়ীর কথা বলেন?

হুম, কানাডার প্রায় শতভাগ বাড়ীই কাঠের তৈরী! এই বাড়ীগুলোকে আবার ভিক্টোরিয়ান স্টাইল বাড়ী বলে ডাকা হয়। কিন্তু ভিক্টোরিয়া আসলো কোথা থেকে? জনাব, প্রথমত ইংল্যান্ডের রানী ভিক্টোরিয়াকে কানাডাও তাদের নিজেদের রানী হিসাবে মানে। এমনকি কানাডা সংক্রান্ত ব্যাপার দেখভাল করার জন্য ব্রিটেনের রানীর নিযুক্ত এজেন্ট জেনারেল কানাডায় কাজ করে থাকেন। যদিও ব্যাপার গুলো আলংকারিক কিন্তু এখনো কানাডায় কলোনিয়াল কন্ট্রিবিউশনের জন্য ভিক্টোরিয়াকে কানাডার রানী হিসাবে সাদরে মানা হয় ।

বুঝলাম কিন্তু ভিক্টোরিয়ান হাউস এর সাথে এর কি সম্পর্ক?

কুইন ভিক্টোরিয়ার রাজত্বকালে (১৮৩৭ থেকে ১৯০১ সাল) যে সকল বাড়ী তৈরী হয়েছিলো সেই বাড়ীগুলোকে ভিক্টোরিয়ান হাউস বলে। মূলত ঠান্ডা থেকে বাঁচতে ইট সিমেন্টের বদলে কাঠ দিয়ে তৈরী হত দ্বিতল বিশিষ্ট এই বাড়ীগুলো। সময়ের পরিক্রমায় এই স্টাইলের বাড়ীগুলো ভিক্টোরিয়ান হাউস নামে পরিচিতি প্রায় যা প্রায় গোটা ইউরোপ আর নর্থ আমেরিকায় জনপ্রিয়। কাঠের দেয়াল অনেকটা দ্বিস্তর বিশিষ্ট, মাঝে ইন্সুলেটর বসানো হয় যাতে ঠান্ডা বাইরে থেকে ভিতরে ঢুকতে না পারে। আপনি চাইলে পুরো হাউস ভাড়া নিয়ে থাকতে অথবা কিনতে পারবেন। পুরো বাড়ী কিনতে গেলে আপনাকে বেশ মোটা অংকের টাকা ব্যয় করতে হবে। যেমন একই বাড়ী হয়ত আপনাকে ভ্যাঙ্কুভারে কিনতে গেলে ৬০০,০০০ ডলারে কিনতে হবে আবার সেই বাড়ী সাস্কাচুয়ান বা মন্ট্রিয়ালে কিনতে গেলে হয়ত ২০০,০০০ ডলার ব্যয় করতে হবে। বাড়ীর দাম প্রভিন্স থেকে প্রভিন্সে উঠানামা করে।

কিন্তু বাড়ী তো আর কিনতে পারবো না ভাই, সস্তা কিছু বলেন!

কথা সত্য, আপনি চাইলে খুব সহজেই ১/২ রুমের ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে পারবেন যা অনেকটা বাংলাদেশের আদলে তৈরী করা (কিন্তু কাঠের)। বেশীরভাগ ফ্ল্যাটেই নিচে বেসমেন্ট আর উপরে সাধারণত আরো দুইতলা থাকে। বেসমেন্টে আলো বাতাস সাধারণত অত্যন্ত সীমিত, আবার কোনো কোনো বেসমেন্টে আলো বাতাসের সুযোগ পর্যন্ত থাকে না আর স্বভাবতই বেসমেন্টে রেন্ট খানিটা কম হয়ে থাকে। গড়পড়তা ১ রুমের বাসার জন্য আপনাকে ৮০০-১২০০ ডলার ব্যয় করতে হবে যা প্রভিন্স ভেদে উঠা নামা করে। টরেন্টোতে ১ রুমের স্টুডিও এপার্ট্মেন্টের জন্য যদি আপনি ব্যয় করবেন ১২০০ ডলার তাহলে একই বাসার জন্য হয়ত মন্ট্রিয়ালে আপনাকে ব্যয় করতে হবে ৯০০ ডলার! ২ রুমের বাসার জন্যও গড় পরতা ১১০০-১৪০০ ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে হতে পারে। মূলত আপনার প্রভিন্স ও লোকেশন অনুযায়ী বাসা ভাড়ার দাম উঠানামা করে। যেমন আপনি ডাউন টাউনে (মূল সিটিসেন্টার, আমাদের গুলশান কিংবা মতিঝিল অফিস পাড়া) থাকলে আপনাকে চড়া মূল্য পরিশোধ করতে হবে। ডাউন টাউনেই প্রায় সকল অফিস যে কারণে দাম ও চড়া। আপনি যদি একটু সাব আর্ব (সাব আর্বান, এই ধরুণ উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর) দিকে চলে যান তাহলে ভাড়াও আনুপাতিক হারে কমে আসবে।

হুম, সমস্যা নাই এক রুমেই থাকবো ব্রাদার, ট্যাকা সেভ 🙂 !

উঁহু, এই মুল্লুকে হাইজিন আর হেলথ ফ্যাক্টর অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। ধরুণ আপনি আলহাদুলিল্লাহ দুই বাচ্চার জনক বা জননী। ভাবছেন কানাডা পৌছে চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত এক রুমেই কষ্ট করে থাকবেন। এই মুল্লুকে এটা সম্বভব নয়, আপনাকে বাচ্চার জন্য আলাদা রুম নিতে হবে। বাচ্চার একটা নির্দিষ্ট বয়স হয়ে গেলে তাকে অবশ্যই আলাদা রুম দিতে হবে। আপনি গাদাগাদি করতে থাকতে চাইলেও বাড়ীওয়ালা বা এপার্ট্মেন্টের এজেন্ট এলাও করবে না। মোদ্যাকথা, পরিবারের আকার আকৃতি অনুযায়ী আপনাকে বাসা ভাড়া নিতে হবে। বেসমেন্টে বাসা ভাড়া কম হলেও সেখানে আবার অন্য ঝামেলা! কানাডায় ছারপোকার ভয়াভব, বেসমেন্টের এদের বাস হলেও উপরের তলাগুলোতেও হরহামেশা দেখা যায়। ভালো ভালো এপার্ট্মেন্টের এজেন্টরা ছারপোকা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেস্টা করে থাকেন। অনেক সিটিতেই আপনি কোন কোন বাসায় ছারপোকার আছে তার লিস্ট অনলাইনে পাবেন। ছারপোকা অত্যন্ত দ্রুত বংশবিস্তার করে আবার একবার কোনো বাসায় ঢুঁকে গেলে তা থেকে পরিত্রান পাওয়া বেশ কঠিন!

এই দেশে অনেকেই তার ব্যবহৃত আসবাব পত্র বাসার সামনে রেখে দেন যা আপনি ফ্রি নিয়ে আসতে পারবেন। কি নেই তাতে? টিভি, ফ্রিম, বিছানা থেকে শুরু করে অনেক কিছুই। আমি পরিচিত এক ভাই কি চিনি যিনি কিনা ফ্রি সোফা বাসায় নিয়ে আসার পর সেখান থেকে ছারপোকা পুরো বাড়ীতে ছড়িয়ে যায়। এপার্ট্মেন্টের লোকজন অনেক চেষ্টা করেও ছারপোকা উৎপাটন করতে পারেনি। পরিশেষে সেই বাসাই তাদের ছাড়তে হয়েছিল!

পরিশেষে, সবাই শুধু সুবিধা জানতে চায়! শতশত মেম্বার ইনবক্স করেছেন কি কি সুবিধা পেতে পারি! মুহতারামে হাজিরিন যারা শুধু গাদা গাদা সুবিধার কথা ভেবে কানাডা আসার কথা ভাবছেন তাদের প্রতি অনুরোধ দয়া করে কিছু রিসার্চ করে আসুন। কানাডা অবশ্যই ল্যান্ড অফ লিভিং, এখানে আপনি সুন্দর ও পরিচ্ছন জীবন পাবেন কিন্তু তার মানে এই না আপনি নাকে তেল দিয়ে ঘুমাবেন আর সরকার আপনার সকল দায়ভার নিজের কাধে নিবে।

সবাই শুধু ফ্রি চায়!

তাহলে ফ্রি নিয়েই আজকের লেখা শেষ করি! আগেই বলেছি ব্রিটেনের রানীকে কানাডাও রানী হিসাবে মানে। আপনি রানীর ছবি বাসায় বা আপনার অফিসে টাঙাতে চান? নির্দিস্ট ইমেইল এড্রেসে আপনার পূর্ণ ঠিকানা সহ পাঠিয়ে দিন আপনার বাসায় রানীর স্ট্যান্ডার্ড সাইজের ছবি প্রিন্ট করে যথাযথ কতৃপক্ষ আপনার বাসায় বিনামূল্যে পাঠিয়ে দিবে!

ভালো থাকুন।

পুনশ্চঃ ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে পরবর্তী পর্বগুলো শীঘ্রই লেখা সম্ভব হচ্ছে না। সময় সুযোগ করে আবার লিখবো কোনো এক সময়। ধন্যবাদ।

পর্ব ০১:https://m.facebook.com/groups/103145476396104?view=permalink&id=1613627335347903

পর্ব ০২:https://m.facebook.com/groups/103145476396104?view=permalink&id=1614699555240681

পর্ব ০৩:https://www.facebook.com/groups/camigbd/permalink/1617013041675999/

 

Courtesy:

Akhlaqur Rahman Rahi